লিটল থিংস বন্ধের জন্য দায়ী ফেসবুক: প্রাক্তন সিইও জো স্পিজার
২০১৪ সালে লিটল থিংস প্রতিষ্ঠা করেন জো স্পিজার। নারী-কেন্দ্রিক এই ডিজিটাল মিডিয়া সাইটটি বিভিন্ন প্রাণির ভিডিও, রেসিপি এবং ভিন্নধর্মী কিছু ভিডিও কন্টেন্ট প্রচারের জন্য সমাদৃত। কিন্তু ২০১৮ তে বন্ধ করে দেওয়া হয় লিটল থিংসের কার্যক্রম। লিটলথিংস ডটকম বন্ধের পেছনে ফেসবুককেই দায়ী করেন জো স্পিজার।
ফেসবুকের একটি অ্যালগরিদম পরিবর্তনের আগ পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই চলছিল স্পিজারের প্রতিষ্ঠান। অল্প কয়েকদিনেই তারা পেয়ে যায় ২০ মিলিয়ন সোশ্যাল মিডিয়া ফলোয়ার, যার বেশিরভাগই তৈরি হয় ফেসবুকের বিশাল ইউজারবেস থেকে।
এমনকি ফেসবুক তাদের একটি বার্ষিক সম্মেলনে লিটল থিংসকে একটি সফল মিডিয়া কোম্পানি তৈরির উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে বলেও জানান স্পিজার।
কিন্তু ফেসবুক তাদের অ্যালগরিদম পরিবর্তন করলে কোম্পানি পেজগুলোতে ক্রমেই ইউজার ট্রাফিক কমতে থাকে। মূলত, পরিবার ও ফ্রেন্ডলিস্টের ব্যবহারকারীদের পোস্ট প্রোমোট করার জন্য অ্যালগরিদমে পরিবর্তন আনে ফেসবুক।
তাদের ধারণা ছিল, এতে করে ব্যবহারকারীরা দীর্ঘক্ষণ ফেসবুকে থাকবে। এছাড়া, অ্যালগরিদম পরিবর্তনের পর ফেসবুকে হিংসাত্মক ও মিথ্যা বিষয়বস্তু প্রচার শুরু হয় ব্যাপকহারে।
স্পিজার টুইট করে বলেন, "ফেসবুক সিইও মার্ক জুকারবার্গ আমাদের বানানো কন্টেন্ট পছন্দ করেন নি। তিনি চেয়েছিলেন বাকিরা তাকে আরও গুরুত্ব দিক।"
স্পিজার বলেন, তার প্রতিষ্ঠিত সাইটটি ফেসবুকে ইউজার ট্র্যাফিকের ৯০ শতাংশ হারায় সেসময়।
ট্র্যাফিক কমে আসায় ১০০ জন কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হন স্পিজার। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার হারান তিনি।
"এটি মৃত্যুদণ্ডের মতো ছিল," বলেন তিনি।
এমনকি অন্যান্য স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, যদিও অ্যামাজন, টিকটক, গুগল, স্পটিফাই এবং ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপগুলোতে বেশ দ্রুতই লাভের মুখ দেখা যায়, এর কোনোটিই দীর্ঘস্থায়ী নয়।
"একটি সাধারণ অ্যালগরিদম পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনার পুরো ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে জেনেও কি আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন?"
এছাড়া, উল্লেখিত অ্যালগরিদম পরিবর্তনের ফলে সংবাদ উৎপাদনে ফেসবুকের প্রভাব নিয়ে ইতোমধ্যেই বেশ বিতর্ক চলছে। এই পরিবর্তনের ফলে দেখা যায়, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই অন্যান্য কন্টেন্টের তুলনায় সংবেদনশীল ও চাঞ্চল্যকর কন্টেন্ট, এমনকি ক্লিকবেইট দেখতেই বেশি পছন্দ করে।
গত বছর ফেসবুকের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে তুমুল আলোচনায়ও উঠে আসে এই অ্যালগরিদম পরিবর্তনের বিষয়টি। কোম্পানিটির অভ্যন্তরীণ একটি ডকুমেন্টে দেখা গেছে, ফেসবুকের নিজস্ব কর্মচারীরাও এই অ্যালগরিদমের বিরূপ প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তবে, বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা। প্রকাশ হওয়া ডকুমেন্টগুলোতে তাদের কার্যক্রমের সম্পূর্ণ চিত্র নেই বলে উল্লেখ করে তারা।
- সূত্র- বিজনেস ইনসাইডার