ইউডেমি, কোর্সেরা-র আদলে আসছে ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম
তরুণ প্রজন্মকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইউডেমি ও কোর্সেরা-র মতো বৈশ্বিক অনলাইন কোর্স প্রোভাইডারদের আদলে একটি ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।
২০২৩ সালের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সি অন্তত ২৫ লাখ তরুণের কাছে কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে ডিজিটাল লার্নিং কোর্স কনটেন্ট। এরই অংশ হিসেবে ২৭.৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে 'ডিজিটাল ইন্টারঅ্যাকটিভ ন্যাক ফর নলেজেবল হিউম্যান অ্যাসেটস' (দিক্ষা) প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় দিক্ষা শীর্ষক প্ল্যাটফর্মে মোট ৫০টি কোর্সের ই-লার্নিং কনটেন্ট যুক্ত করা হবে।
কোর্স সম্পন্ন করার পর অন্তত ২০ শতাংশ ব্যবহারকারীর শোভন ও উপযুক্ত কাজের দক্ষতা অর্জন করে কাজে যোগ দিতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্প প্রস্তাব থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আইসিটি বিভাগের প্রস্তাবনার ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় আইসিটি বিভাগের জমা দেয়া পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদন দিয়েছে পিইসি।
বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে প্রকল্পটির পরিচালকের (পিডি) নিয়োজিত আছেন আইসিটি বিভাগের উপসচিব মো. মনির হোসেন। তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে বাস্তবায়ন কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এ প্রকল্পে প্রথমবারের মতো ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণদের জন্যও উপযুক্ত ডিজিটাল লার্নিং কনটেন্ট নির্মাণের মাধ্যমে এই তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষতা অর্জনের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব হবে।
আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এ প্ল্যাটফর্মে যেকোনো কোর্সের নিবন্ধনের সময় তরুণদের প্রোফাইল সাবমিট করতে হবে। প্রোফাইল পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্য উপযুক্ত কোর্স বাছাই করে দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা হবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তরুণদের কর্মক্ষেত্রে বাস্তব পরিবেশ ও দক্ষতা প্রয়োগের অনুভূতি দিতে কিছু কনটেন্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এর মাধ্যমে আইসিটি শিক্ষায় তরুণদের সর্বোচ্চ সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হবে।
প্রকল্প অফিস সূত্র জানায়, প্রতিটি কোর্স কনটেন্ট তৈরিতে গড়ে ৩৬.৮০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এ হিসাবে ৫০ কোর্সে ব্যয় হবে ১৮.৪০ কোটি টাকা। অবশিষ্ট অর্থ ব্যয় হবে প্রকল্পের অন্যান্য ব্যয় নির্বাহে।
প্রকল্পে বিজ্ঞাপন বাবদ ৩৬.২২ লাখ টাকা বরাদ্দের যৌক্তিকতা নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হলে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমেই কেবল এই প্ল্যাটফর্মের তথ্য তরুণদের কাছে পৌঁছানো যাবে।
প্রকল্পের সার্টিফিকেট কোর্সগুলো উন্মুক্ত হলে টেলিভিশন, রেডিও ও প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যপকভাবে প্রচারণা চালানো হবে।