ফেব্রুয়ারিতে কমেছে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি আগের মাসের তুলনায় কমেছে দশমিক ৩৫ পয়েন্ট। তবে, এ খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১০.৭২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
যদিও আগে মাস জানুয়ারিতে প্রায় আড়াই বছরের মধ্যে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল সর্বোচ্চ।
চলতি বছরের শুরু থেকে দেশের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে বেসরকারি খাতের ঋণের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। টানা আট মাস পর এই খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ফেব্রুয়ারিতে এসেই কিছুটা কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্য সরবরাহে প্রভাব পড়ায় এ ঋণ কমেছে।"
তিনি আরও বলেন, "কোভিড পরবর্তী সময়ে শিল্প কারখানাগুলো পুরোদমে উৎপাদন চালু করায় দেশে ঋণের চাহিদা বেড়েছে। বিশেষে করে ছোট উদ্যোক্তারাও অধিক পরিমাণে ঋণ নিয়েছে; যার ফলে সার্ভিকভাবে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে।
জুনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষমাত্রা পুরণ হবে আসা করি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৫৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। এরপর ডিসেম্বরে এসে এ ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ১২ লাখ ৭৭ হাজার ১৬৭ কোটি টাকায়।
এর আগে চলতি জানুয়ারিতে বেসরকারি ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ লাখ ৬৬ হাজার ২২৩ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, অধিক পরিমাণ আমদানি বৃদ্ধি, বিশেষ করে মুলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়ার ফলে বেসরকারি খাতের ঋণ বাড়ছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাস জুলাই-জানুয়ারিতে ঋণপত্র খোলার হার (এলসি) বেড়েছে ৪৯ শতাংশ ও ঋণপত্র নিষ্পত্তি বেড়েছে ৫২ দশমিক ৫০ শতাংশ। এতে ডলারের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। যদিও সেই তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসে প্রবাসী আয় কমেছে ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, "চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাচ্ছে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় এলসি খুলতে হয়েছে বেশি। যার কারণে পুরো ব্যাংকিং খাতে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। বিশেষ করে ক্যাপিটাল মেশিনারি ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে।"
"ঈদ উপলক্ষে আমদানির পরিমাণ বাড়ায় ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমলেও মার্চে তা বাড়বে," যোগ করেন তিনি।
চলতি অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুলাই মাসে মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। এতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয় ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কোভিডের কারণে গত মে মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি খুবই কম ছিল।
সে সময়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। এরপর থেকে তা ধারাবাহিকভাবে জানুয়ারি পর্যন্ত বেড়েছে এবং ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা কমেছে।