পাকিস্তানের ‘সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী’ কে এই শেহবাজ শরিফ?
পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন দেশটির প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরিফ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেভাবে পরিচিতি না থাকলেও পাকিস্তানের ঘরোয়া রাজনীতিতে দক্ষ প্রশাসক হিসেবে সুনাম রয়েছে তার।
কে এই শেহবাজ শরিফ?
পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শেহবাজ। ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের লড়াইয়ে বিরোধীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। রোববার ভোররাতে জাতীয় পরিষদের অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরখাস্ত হন ইমরান। কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এবার পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন শেহবাজ শরিফ।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে শেহবাজের, তার ভাই নওয়াজ শরিফের যা ছিল না। ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, ২২ কোটি মানুষের পাকিস্তানে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতি বরাবরই নিয়ন্ত্রণ করে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী। সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ক্ষমতায় থাকার অন্যতম চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানে।
একাধিকবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন শেহবাজ শরিফ। সেই সময় চিনের সিপিইসি প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে বেইজিংয়ের সঙ্গে কাজ করেছেন শেহবাজ। তিন দফায় ১২ বছর ধরে পাঞ্জাবের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। প্রথমে ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ এবং পরবর্তীতে টানা দুই দফায় ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শেহবাজ। ২০১৮ সাল থেকে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় নেতার পদ সামলেছেন।
১৯৯৯ সালে পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর শেহবাজকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সৌদি আরবে নির্বাসিত করা হয়েছিল। ২০০৭ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২০১৭ সালে প্রকাশিত পানামা পেপারসে নওয়াজ শরিফের নাম উঠে আসার পর শেহবাজ পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ পার্টির প্রধান হন। পাঞ্জাবের রাজনীতি ছেড়ে সেই প্রথম জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ তার।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের ভালো সম্পর্কে বিশ্বাসী শেহবাজ শরিফ। বলে রাখা ভালো, ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের পর থেকেই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে এসেছেন, তার সরকারের পতনের নেপথ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে শেহবাজ তার ভাইয়ের মতোই মার্কিনপন্থী নীতিতে বিশ্বাসী। অনাস্থা ভোটে বিরোধীদের জয়ের পর শেহবাজ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, "আমরা কারো বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেব না, কারো প্রতি অবিচার করব না এবং কাউকে জেলে পাঠাব না, আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে।"
- সূত্র: আল জাজিরা, টাইমস নাও