ইতালিতে একদিনে ১৩৩ জনের প্রাণহানি
ইতালি থেকে আসা দুই প্রবাসী বাংলাদেশির দেহে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মাঝে একজনের মাধ্যমে এটি ছড়িয়েছে তার স্ত্রীর শরীরে। দেশে এখন পর্যন্ত ধরা পড়া সব কয়টি সংক্রমণের উৎস হচ্ছে ইতালি।
ইতালিতে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) ছড়িয়ে পড়ার গতি কমার কোনো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না। বরং সকল দিক থেকেই তা এমনভাবে বাড়ছে, যা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরও উদ্বিগ্ন করছে।
এর আগে শনিবার একদিনে অর্ধশত ব্যক্তির মৃত্যুর পর এবার গত রোববার সারাদিনে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩৩ জন। সোমবার ইতালির জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা সংস্থা এই তথ্য জানায়।
এসময় নতুন করে ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা তুলনায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে বলে জানানো হয়।
সর্বশেষ তথ্যানুসারে, চীনের বাইরে এখন ইতালিতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত। সংখ্যাবৃদ্ধির দিক থেকে যা দক্ষিণ কোরিয়াকে পেছনে ফেলে। দক্ষিণ কোরিয়ার ৭ হাজার ৩১৩ জন ব্যক্তি আক্রান্ত হলেও ইতালিতে তা এখন ৭ হাজার ৩৭৫ জনের মাঝে ছড়িয়েছে।
মাত্র একদিন আগেই গত শনিবার সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ হাজার ৮৮৩ জন।
এদিকে, এমন সময় ভাইরাসটি বিস্তারলাভের কথা জানা গেলো যখন সরকারি নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত রোববার থেকেই দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে যোগাযোগ 'বিচ্ছিন্ন' হয়ে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইতালিবাসী।
এর ফলে প্রায় ১৪টি প্রদেশের মানুষকে এখন থেকে তাদের নিজেদের আঞ্চলিক সীমানা অতিক্রম করে দেশের অন্যস্থানে যেতে হলে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। এসব প্রদেশে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষের বসবাস।
প্রধানমন্ত্রী জিসেপে কন্টে নতুন 'কোয়ারেন্টিন' পরিকল্পনায় ইতোমধ্যেই ইতালিজুড়ে বিদ্যালয়, ব্যায়ামাগার, জাদুঘর, নাইটক্লাব, প্রেক্ষাগৃহ, নাটমঞ্চসহ সকল প্রকার জনসমাবেশস্থল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুরো বিশ্বের মাঝে ইতালি বয়োজ্যেষ্ঠ জনসংখ্যা শীর্ষে থাকা দেশগুলোর একটি। আর কোভিড-১৯-এ বয়স্কদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিই সবচেয়ে বেশি।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তর ইতালির লমবার্ডি অঞ্চলে। সেখানকার জনস্বাস্থ্য চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র এবং হাসপাতালগুলো রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে দীর্ঘদিন পর এবার ইউরোপের কোনো দেশে হাসপাতালের করিডরে রোগীদের রাখতে বাধ্য হচ্ছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।