রাতভর লাইনে অথচ বিক্রি শুরু হতে না হতেই টিকিট শেষ
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল শনিবার। আজ দ্বিতীয় দিনের বিক্রি শুরু হতেই অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ২৮ এপ্রিলের সমস্ত অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
টিকিটপ্রত্যাশীদের ধারণা, স্টেশনে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষারত হাজার হাজার মানুষের মধ্যে ৫০ জনও এই সোনার হরিণের দেখা পায়নি আজ!
সকালে টিকিটপ্রত্যাশী আহমেদ ছফা টিবিএসকে বলেন, "আমি গত রাত থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু এখন কর্তৃপক্ষ দাবি করছে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।"
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই দুর্নীতি করছে, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির জন্য মজুদ করে রাখছে।
টিকিটের জন্য দাঁড়ানো লাইনে আহমেদের অবস্থান ছিল ৭০তম। তার পেছনে পড়ে ছিলেন কয়েকশ মানুষ। অথচ আহমেদের পালা আসার আগেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে!
একই অবস্থা দেখা গিয়েছিল গতকালও। প্রথম দিনে বিক্রির জন্য বরাদ্দকৃত সমস্ত টিকিট অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে বিক্রি হয়ে যায়।
দেশের বৃহত্তম অনলাইন টিকিট সেলিং প্ল্যাটফর্ম সহজ ডট কমে ট্রাফিক বেড়ে সার্ভারে ত্রুটির কারণে ঝামেলা আরও বেড়ে যায়।
অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা বিমানবন্দর, বনানী ও তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন এবং ফুলবাড়িয়াতে একই চিত্র দেখা যায়।
সুদীর্ঘ যানজট এবং উচ্চ যাতায়াত ভাড়ার কারণে বেশিরভাগ যাত্রীই ঈদে সড়কপথে ভ্রমণ এড়ানোর চেষ্টা করেন। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বেড়েছে।
শনিবারের একজন টিকেটপ্রত্যাশী রতন টিবিএসকে বলেন, "বাসে গেলেই আপনি নিশ্চিত জ্যামে পড়বেন। সময় তো নষ্ট হয়ই, শিশুরাও ভোগান্তির শিকার হয়। তবে ট্রেন ভ্রমণে এসব সমস্যা নেই। যা কষ্ট শুধু টিকিটটা হাতে পেতেই।"
আগামী ২ মে ঈদুল ফিতর ধরে নিয়ে ১ মে পর্যন্ত ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য কমলাপুর স্টেশন থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার টিকিট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এসব টিকিটের অর্ধেক স্টেশনের কাউন্টারে, বাকি অর্ধেক অনলাইনে বিক্রি হওয়ার কথা।
তবে অনেকেই অভিযোগ করেন, টিকিট কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে, যার কারণে কাউন্টার স্লো করে দিয়েছে কালোবাজারে বিক্রির জন্য।
এছাড়া, নারীদের জন্য একটি মাত্র কাউন্টার হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে।
এবার যাত্রীদের ভিড় এড়াতে রাজধানী কমলাপুর রেল স্টেশন, ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন, তেজগাঁও স্টেশন, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)-এ ৫টি স্থানে টিকেট বিক্রি হচ্ছে।
কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে সমগ্র পশ্চিমাঞ্চল ও খুলনাগামী স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট মিলবে, তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ ও জামালপুর রুটের সব আন্তঃনগর ট্রেন এবং দেওয়ানগঞ্জ স্পেশালের টিকিট বিক্রি হবে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে এবং ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগমী সব আন্তঃনগর ট্রেন টিকিট পাওয়া যাবে।