মাঙ্কিপক্স কী? স্মলপক্সের চেয়ে এটি কোথায় আলাদা?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে মাঙ্কিপক্স। প্রাণীদের থেকে সংক্রমিত এই রোগ যৌন নেটওয়ার্কের পথে ছড়িয়ে পড়ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে।
কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ব়্যাশ বিশেষত তা যদি যৌনাঙ্গের চারপাশে হয়ে থাকে, তাহলে সতর্ক হওয়ার বার্তা দিচ্ছে হু।
কীভাবে ছড়াচ্ছে রোগ?
ইউরোপ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে হু হু করে ছড়িয়ে যেতে শুরু করেছে এই রোগ। বর্তমানে এই মাঙ্কিপক্সের প্রথম কেসটি ধরা পড়েছে ৭ মে। সেটি যুক্তরাজ্যে ধরা পড়ার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই রোগের আক্রান্তের খবর আসে।
প্রাথমিকভাবে এই রোগ আফ্রিকায় দেখা গেলেও তা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ফের করোনার মতোই আশঙ্কা তৈরি করছে। এই রোগ সম্পর্কে এইচটির তরফে মুম্বাইয়ের মাসিনা হাসপাতালের ডক্টর সুলেমান লাধানির সঙ্গে কথা বলা হয়। তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে এই মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে স্মল পক্সের কতটা মিল রয়েছে।
মাঙ্কিপক্স ও চিকেন পক্সের মিল
চিকিৎসক সুলেমান লাধানি বলছেন, স্মল পক্সের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের মিল রয়েছে। দুটি রোগই অর্থপক্স ভাইরাস থেকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। তবে মানুষকে দুর্বল করার ক্ষেত্রে স্মলপক্সের ক্ষমতা মাঙ্কিপক্সের থেকে খানিকটা বেশি। মূলত এই পক্সের ভাইরাস আফ্রিকায় পাওয়া যায়। বিশেষত আফ্রিকার বৃষ্টি অরণ্যে এই ভাইরাস পাওয়া যায়।
স্মলপক্সে যে কষ্ট হয় তা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তবে স্মলপক্সের মতোই মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলি। ব়্যাশ, জ্বর, মাথার যন্ত্রণা। তবে মাঙ্কিপক্স থেকে সেরে উঠতে ৩ সপ্তাহই লাগে।
উল্লেখ্য, হু এর তরফ থেকে ইতিমধ্যেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার উৎস খোঁজা শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, কাঠবেড়ালী, ইঁদুর জাতীয় প্রাণীর থেকে দূরে থাকতে। এমনকি এদের রক্ত থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জ্বর বেশি দিন থাকলে ও তার সঙ্গে ব়্যাশ থাকলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ। ইংল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইডেন, স্পেন, পর্তুগালে ব্যাপক সংখ্যায় ছড়িয়ে পড়েছে এটি। তবে সবচেয়ে মারাত্মক অবস্থা জার্মানির। বহু মানুষ আক্রান্ত সেখানে। এর বাইরেও কানাডা, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াতেও পাওয়া গিয়েছে এই রোগের সংক্রমণ।
বিদেশ থেকে ভারতে ঢোকার সব ক'টি পথেই কড়া স্বাস্থ্যপরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হল সরকারের তরফে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তো বটেই, স্থলপথ এবং জলপথে ভারতে পৌঁছোনোদের জন্যও এই স্বাস্থ্যপরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হল।
দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভায়রোলজিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যারা বিদেশ থেকে ভারতে আসছেন, তাদের শরীরে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। বিশেষ করে যাদের এই অসুখের উপসর্গ আছে, তাদের পরীক্ষা করতেই হবে বলে জানানো হয়েছে।