দীর্ঘ সংঘাতে ইউক্রেনকে সহায়তায় আগ্রহ হারাবে পশ্চিমা শক্তি, ভয় কিয়েভের
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন চতুর্থ মাসে পা দিল। এরইমধ্যে কিয়েভ তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে ব্যাপকভাবে সামরিক সহায়তা পেয়েছে। তবে চলমান এই সংঘাত আরও দীর্ঘ হলে পশ্চিমারা ইউক্রেনকে সহায়তায় আগ্রহ হারাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কিয়েভের কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইউক্রেনকে এ পর্যন্ত কয়েক বিলিয়ন ডলারের অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়েছে। সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এমন কয়েক মিলিয়ন মানুষকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ জায়গা দিয়েছে। সেইসঙ্গে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপ দেখিয়েছে এক নজিরবিহীন ঐক্য।
কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণের প্রাথমিক ধাক্কা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, সংঘাতকে আরও দীর্ঘ হতে দিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্যের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের অনাগ্রহের সুযোগ নিতে পারে ক্রেমলিন। গত সপ্তাহে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনেও এমনটিই বলা হয়েছিল।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে অনেকটা ধৈর্য্যের খেলায় নেমেছেন। তিনি সংঘাতকে আরও লম্বা করছেন, যেন এক সময় পশ্চিমারা হাল ছেড়ে দিয়ে নিজেদের অর্থনীতি ও সমস্যাগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়। এবং সেই সুযোগে কিয়েভের ওপর চাপ তৈরি করে বর্তমান সংকটের অবসান ঘটাবে ক্রেমলিন।
এদিকে, কিছু পশ্চিমা দেশ ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে কিছুটা আপোসের পরামর্শ দিলে তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইউক্রেন তার নিজস্ব শর্তাবলীর ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেবে।
ইতালির পক্ষ দেওয়া শান্তি প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছে ইউক্রেন। সেইসঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখোকে তার বক্তব্যের জন্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখিও হতে হয়েছে দেশটির কাছ থেকে। ম্যাঁখো বলেছিলেন, যদিও পুতিনের এমন আক্রমণ একটি 'ঐতিহাসিক ত্রুটি', তারপরেও বিশ্ব শক্তির উচিত নয় 'রাশিয়াকে অপমান করা'।
"তাই যখন লড়াই থামবে, তখনই আমরা কূটনৈতিক মাধ্যমে অগ্রসর হয়ে বিনির্মাণের কাজ শুরু করতে পারবো", যোগ করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট ম্যাঁখোর এমন বক্তব্যে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, এই ধরনের আলোচনা 'কেবল ফ্রান্স এবং অন্য যে কোনো দেশকে শুধু অপমানই করতে পারে'।
- সূত্র: আল জাজিরা