কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১০
আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দুই দফায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১১০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে আল জাজিরা।
নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন মার্কিন মেরিন সেনা রয়েছেন। এছাড়া, প্রায় ১৫০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মার্কিন সেনাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পেন্টাগন।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিমানবন্দরের নিকটবর্তী ব্যারন হোটেলের কাছে প্রথম বোমা হামলাটি হয় বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্যে যেতে আগ্রহী আফগানদের ব্যবস্থাপনায় নিযুক্ত ছিল ব্যারন হোটেল।
পরবর্তীতে শুরু হয় গোলাগুলি। এরপর বিমানবন্দরের অন্যতম প্রধান প্রবেশপথ অ্যাবি গেটের কাছে দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে।
বিবিসিকে পেন্টাগনের মুখপাত্র জানান, নিহতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকসহ বেশ কিছু বেসামরিক মানুষ রয়েছেন।
পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে সতর্কবার্তা জারি করার কয়েক ঘণ্টার ভেতর হামলার এই ঘটনা ঘটে।
ব্রিটিশ এবং তুর্কি সেনা সূত্র দুইটি বোমা হামলার খবর নিশ্চিত করেছে। প্রাথমিকভাবে ইসলামিক স্টেট অব খোরাসান (আইসিস-কে) এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলা পরবর্তী আহতদের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। ছবিতে বিস্ফোরণে হতাহতদের সরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
এর আগে, পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কিরবি টুইটারে হামলার সংবাদ নিশ্চিত করেন। টুইট বার্তায় তিনি বলেন, "কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণের বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করছি। হতাহতের সংখ্যা এই মুহূর্তে পরিষ্কার নয়। বিস্তারিত জেনে আপনাদের জানানো হবে।"
পশ্চিমা দেশগুলো এর আগে ইসলামিক স্টেটের হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত তালেবান যোদ্ধাদের শত্রু হিসেবে গণ্য করে আইসিস-কে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তালেবান নেতা রয়টার্সকে বলেন, "কাবুল বিমানবন্দরে আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা ঝুঁকিতে রয়েছে। তারাও ইসলামিক স্টেট গ্রুপের হুমকির সম্মুখীন।"
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসির এক সাংবাদিককে জানিয়েছেন, যে বোমাটি ফেটেছে তা ছিল 'খুবই শক্তিশালী'।
রয়টার্স বার্তা সংস্থা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে তাতে এই ব্যক্তি বলছেন, বিস্ফোরণের সময় সেখানে অন্তত চারশো থেকে পাঁচশো লোক উপস্থিত ছিল।
নিহতদের মধ্যে 'বিদেশি সৈন্য' রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, "আমরা স্ট্রেচারে করে আহতদের সরিয়ে নেই...রক্তে আমার পোশাক ভিজে গিয়েছিল।"
বিবিসি সংবাদদাতা জনাথান বিল জানান, প্রথম হামলার পর দ্বিতীয় আরেকটি বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে তার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন তখন তাকে কাবুল বিমানবন্দরের এই হামলা সম্পর্কে খবর দেয়া হয়।
এই ঘটনার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে জরুরি বৈঠক করছেন।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি ও রয়টার্স