আমিরাতের প্রস্তুতি ক্যাম্পে টি-টোয়েন্টি সিরিজও খেলবে বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টি দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরামের অধীনে তিন দিনের ক্যাম্প রাখা হয়েছিল। ম্যাচের আবহে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন করার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে একদিনও ভালোভাবে অনুশীলন হয়নি। এ ছাড়া ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে আগেভাগেই নিউজিল্যান্ড যাওয়ার পরিকল্পনা সাজিয়েও সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। তাই দেশের বাইরে প্রস্তুতি ক্যাম্প করার পরিকল্পনা করেছে বিসিবি।
একদিন আগেই বিসিবি সভাপতি জানান, ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার আগে দেশের বাইরে ক্যাম্প করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পরদিন জানানো হলো কোন দেশে ক্যাম্প করা হচ্ছে। তবে এই প্রস্ততি ক্যাম্পে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। ক্যাম্পের মাঝেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানান বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডও। দুই ম্যাচের সিরিজটির নাম দেওয়া হয়েছে স্কাইএক্স ইউএই বনাম বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপি সিরিজ। ম্যাচ দুটি দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৫ ও ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
প্রস্তুতি ক্যাম্প করতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেবে বাংলাদেশ। ৬ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প ও সিরিজ খেলে ২৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবে দল। দুই-তিন দেশে থাকার পর ২ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছানোর কথা বাংলাদেশের। পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের অংশগ্রহণে ৭ অক্টোবর শুরু হবে সিরিজটি। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান।
ত্রিদেশীয় সিরিজ ও অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ক্যাম্প আমিরাতে করে কতোটা উপকার হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তবে বিসিবির প্রধান নির্বাহী জানালেন, কন্ডিশনের চেয়ে স্কিল ঝালাই করে নেওয়াতে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। এ কারণেই এই ক্যাম্প। তিনি বলেন, 'আসলে কন্ডিশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, এখানে আবহাওয়ার কারণে খুব একটা সুযোগ আমরা পাইনি প্র্যাকটিসের।'
'এই বিষয়গুলো বিবেচনা করেই এটা টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা, সে অনুযায়ী আমাদের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। কন্ডিশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ম্যাচ পরিস্থিতি এবং অন্যান্য যে অনুশীলন সুবিধা দুবাই স্পোর্টস সিটিতে আছে, সেগুলো আমরা কাজে লাগাতে পারব।' যোগ করেন তিনি।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতির কথা মাথায় রেখে আরও কিছু পরিকল্পনা আছে বিসিবির। এই ক্যাম্পের মাধ্যমে সেই পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, 'শুধু যে ওখানকার সুযোগ-সুবিধার জন্যই যাওয়া হচ্ছে, তা নয়। আরও কিছু পরিকল্পনা তো আছে। সব ব্যাপারগুলো ওভাবে সামনে না এনে আমাদের ফোকাস থাকবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দলকে পুরোপুরি তৈরি করা।'
হুট করেই এই ক্যাম্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ কারণে কোচিং স্টাফদের সবাইকে ক্যাম্পে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। তবে সবাইকে ক্যাম্পে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্বকাপ ও নিউজিল্যান্ডে সিরিজের দলে স্ট্যান্ড বাই তালিকায় থাকা চার ক্রিকেটারকেও এই ক্যাম্পে রাখা হবে।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, 'আশা করছি বেশিরভাগই (কোচিং স্টাফ) থাকবে। যেহেতু হুট করে এ পরিকল্পনা, সবার আরও কিছু নিজেদের প্রস্তুতির ব্যাপার ছিল। তখন নিউজিল্যান্ডে কয়েকজনের যোগ দেওয়ার কথা ছিল। এখন আশা করছি দুবাইয়ে যেন জয়েন করেন কোচিং স্টাফের সদস্যরা। যে মূল দল ঘোষণা করা হয়েছে, এর বাইরে স্ট্যান্ড বাই হিসেবে থাকা ক্রিকেটাররা যাবে।'
আমিরাতের ক্যাম্পে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে পাওয়া নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলতে তাকে ছুটি দিয়েছে বিসিবি। তাই সাকিবকে ছাড়াই ক্যাম্প ও ম্যাচ দুটি খেলতে হতে পারে বাংলাদেশ। সাকিবের ব্যাপারে টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'সাকিব আল হাসানকে আগেই একটা ডমেস্টিক টুর্নামেন্টের জন্য এনওসি (অনাপত্তিপত্র) দেওয়া আছে। ওই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। টিম ম্যানেজমেন্টই সিদ্ধান্ত নেবে, ওই সময়ে তাকে ফিরিয়ে আনার কতটুকু দরকার আছে।'