বিশ্বকাপের সেরা একাদশে ইংল্যান্ডের দাপট, আছেন রাজা-নরকিয়াও
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হবার পরপরই ভক্তদের আগ্রহ ছিলো আসরের সেরা একাদশে কারা থাকেন সেটি দেখার জন্য। তবে অন্যান্যবারের তুলনায় এবারের একাদশ নির্বাচন বেশ সহজই ছিলো বলা যায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের সেরা একাদশ ঘোষণা করেছে আইসিসি। টুর্নামেন্ট জুড়ে অসাধারণ পারফর্ম করেছেন যারা তাদের মধ্যে থেকেই এই একাদশ বেছে নেয়া হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড থেকে দলে আছেন ৪ জন, রানার্স-আপ পাকিস্তান এবং ভারত থেকে ২ জন করে, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ে থেকে আছেন ১ জন করে।
একাদশে যারা আছেন-
অ্যালেক্স হেলস (ইংল্যান্ড)
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এসে দুর্দান্ত একটি টুর্নামেন্ট কাটিয়েছেন মারকুটে এই ইংলিশ ওপেনার। নিজের স্বভাবজাত খেলা দিয়ে ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে রেখেছেন বড় ভূমিকা। সেমি-ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ৪৭ বলে অপরাজিত ৮৬ রানের ইনিংসের সাথে ৬ ম্যাচে ৪২ গড় এবং ১৪৮ স্ট্রাইক রেটে হেলস করেছেন ২১২ রান।
জস বাটলার (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটের অধিনায়ক হিসেবে এটিই বাটলারের প্রথম কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট ছিলো। ব্যাট হাতে বাজিমাত করার পাশাপাশি উইকেটের পেছনে বাটলার ছিলেন ইংল্যান্ডের বড় ভরসার জায়গা। টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচ খেলে ৪৫ গড় এবং ১৪৫ স্ট্রাইক রেটের সাহায্যে ২২৫ রান করেছেন বাটলার। ইংল্যান্ডের পক্ষে যেটি টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ।
বিরাট কোহলি (ভারত)
অনেকের চোখেই ফুরিয়ে যাওয়া কোহলি বিশ্বকাপে নিজের জাত চিনিয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ী অসাধারণ ইনিংস খেলার সাথে সাথে ৬ ম্যাচের ৪টিতেই অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন কোহলি। ৬ ম্যাচে ৯৮.৬৬ এর বিস্ময়কর গড়ে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ২৯৬ রান করেছেন কোহলি।
সূর্য কুমার যাদব (ভারত)
এ বি ডি ভিলিয়ার্সের পর বিশ্ব ক্রিকেটে এখন তিনি ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরিচিত। বিশ্বকাপেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন সুরিয়া। ৬ ম্যাচে ১৯০ স্ট্রাইক রেটে ২৩৯ রান করেছেন তিনি, বিশ্বকাপে তার থেকে বেশি স্ট্রাইক রেট নেই কারোর।
গ্লেন ফিলিপস (নিউজিল্যান্ড)
একাদশে একমাত্র কিউই হিসেবে আছেন নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডারের এই ব্যাটসম্যান। এবারের আসরে সেঞ্চুরি পাওয়া দুই ব্যাটসম্যানের একজন তিনি। টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচ খেলে ৪০ গড় আর ১৫৮ স্ট্রাইক রেটে ফিলিপসের সংগ্রহ ২০১ রান।
সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)
বেশকিছু দিন ধরেই সাদা বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন সিকান্দার রাজা। এবারের বিশ্বকাপেও সেটির ব্যতিক্রম ছিলো না। ব্যাটে- বলে সমান পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন রাজা। কোয়ালিফায়ার খেলে সুপার টুয়েলভে আসায় রাজা বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন, সেটি কাজেও লাগিয়েছেন দুর্দান্তভাবে। ৮ ম্যাচে ২১৯ রান করার পাশাপাশি ১০ উইকেট নিয়েছেন সিকান্দার রাজা।
শাদাব খান (পাকিস্তান)
ব্যাটে-বলে সমান নৈপুণ্য দেখিয়েছেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শাদাব খান। তার মূল কাজ বোলিং, সেখানে ৭ ম্যাচ খেলে ১১ উইকেট তুলে নিয়েছেন শাদাব। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শাদাবের ব্রেক থ্রু ছিলো পাকিস্তানের ফাইনালে উঠার অন্যতম কারণ।
স্যাম কারান
ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পাশাপাশি টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও জেতেন ২৪ বছর বয়সী ইংলিশ অল-রাউন্ডার। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই নিজের বোলিং দিয়ে সমর্থক এবং আইসিসির সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন কমিটির নজর কেড়ে নিয়েছেন কারান। ফাইনালের ৩ উইকেট সহ ৬ ম্যাচে কারান নিয়েছেন ১৩ উইকেট। পাশাপাশি ওভারপ্রতি তার ইকোনমিও দুর্দান্ত। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে অসামান্য পারফরম্যান্সের প্রতিদান হিসেবেই একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন কারান।
আনরিক নরকিয়া (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা সেমি-ফাইনালে উঠতে না পারলেও টুর্নামেন্টের সেরা একাদশে আছেন তাদের স্পিডস্টার আনরিখ নরকিয়া। মাত্রে ৫.৩৭ ওভারপ্রতি রান দিয়ে ৫ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছেন নরকিয়া। তার থেকে কম ইকোনমি এবারের আসরে আর কারোরই নেই।
শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান)
ফাইনালে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ধরতে গিয়ে হাঁটুতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় পাকিস্তানি এই ফাস্ট বোলারকে। তবে তার আগেই টুর্নামেন্টে নিজের আলো ছড়িয়েছেন শাহিন আফ্রিদি। শাহিন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন বিশ্বকাপে, মাত্র ৬.১৭ ইকোনমিতে ১৪.৬৬ গড়ে ১১ উইকেট নিয়েছেন এই স্পিডস্টার।
মার্ক উড (ইংল্যান্ড)
এবারের আসরের সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলার ছিলেন ইংল্যান্ডের মার্ক উড। চোটের কারণে সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনালে খেলতে না পারলেও সুপার টুয়েলভে নিজের গতির আগুন ঝড়িয়েছেন উড। সেখানে ৪ ম্যাচে উডের শিকার ৯ উইকেট।