‘খালি মাইনাস পয়েন্ট দেখলে তো হবে না’
পারফরম্যান্সের কারণে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে সেভাবে প্রত্যাশা ছিল না। কিন্তু শঙ্কার কালো মেঘ উড়িয়ে জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু করা দলটি গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচ জিতে সুপার এইটে ওঠে। তিন জয়ে আত্মবিশ্বাসী দেখালেও এই পর্বে প্রতিপক্ষ বিবেচনায় বাংলাদেশকে নিয়ে প্রত্যাশার বেলুন ফোলানো হয়নি। প্রথম দুই ম্যাচে হারের পরও অবশ্য সেমি-ফাইনালে ওঠার দারুণ সুযোগ মেলে, যা তারা কাজে লাগাতে পারেনি।
সমীকরণ মিলিয়ে জয়ের চেষ্টা করেনি বাংলাদেশ, সাধারণ একটি জয়ের সন্ধানে থাকা দলটি শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরে যায়। এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং মানসিকতা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন সবাই, ওঠে সমালোচনার ঝড়। তবে দেশে ফিরে তাসকিন আহমেদ বললেন, শুধুই নেতিবাচক বিষয়গুলো দেখলেই হবে না।
বাংলাদেশ যে সুপার এইটে খেলেছে, এটা তার কাছে বড় ইতিবাচক দিক। যদিও ডানহাতি এই পেসার মনে করেন, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নেতিবাচক দিকই বেশি ছিল। বিশ্বকাপ মিশন শেষে শুক্রবার সকালে দেশে ফিরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আসেননি কোচিং স্টাফরা, ছুটি কাটাতে দেশে ফিরেছেন তারা। আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ফেরার কথা তাদের।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের পর এবার সুপার এইটে ওঠে বাংলাদেশ। উন্নতির কথা বললেন তাসকিন, তবে তার কণ্ঠে ঝরলো হতাশাও। পরক্ষণেই আবার দিলেন ভালো করার প্রতিশ্রুতি, 'ধীরে ধীরে তো উন্নতি হচ্ছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শুরু থেকেই আমাদের পরিসংখ্যান ভালো ছিল না। আগের থেকে তো উন্নতি হচ্ছে। খালি মাইনাস পয়েন্ট দেখলে তো হবে না। এমনিতে মাইনাসেই আছি আমরা। প্লাসে আসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, করেই যাব। আপনারা হতাশ হচ্ছেন, স্বাভাবিক। আবার আমরাও আপনাদের ভালো জয় উপহার দেব। বিশ্বাস রাখেন আমাদের ওপর। আমরা সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছি।'
বোলিংয়ে সন্তুষ্টি থাকলেও ব্যাটিং নিয়ে হতাশার শেষ নেই। পুরো বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা মিলে করেছেন কেবল দুটি হাফ সেঞ্চুরি। হাতেগোণা দুই-একজন ছাড়া কেউ-ই পাননি রানের দেখা। নেতিবাচক দিকই যে বেশি ছিল, তা মেনে নিয়েছেন তাসকিন।
বিশ্বকাপে সহ-অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা এই পেসারের ভাষায়, 'আসলে সত্যি কথা বলতে, ভালোর তো কখনও শেষ নেই। ভালো হোক আর খারাপ হোক… হ্যাঁ, আরও অনেক ভালো হতে পারতো। বিশেষ করে শেষ ম্যাচটা, আমরা সবাই একটু হতাশ হয়েছি। আমরা জেতার চেষ্টা করেছি প্রথমে, ১২ ওভারের মধ্যে। পরে যখন বুঝতে পারলাম ১২ ওভারের মধ্যে শেষ করা সম্ভব না, তখন স্বাভাবিকভাবে খেলার চেষ্টা করেছিল সবাই। তাও জিততে পারিনি।'
'ইতিবাচক দিক আছে। পুরো টুর্নামেন্টে বোলিং বিভাগ যথেষ্ট ভালো করেছে। সুপার এইটে উঠেছি। সর্ব প্রথম এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমরা তিনটা জয় পেয়েছি। মানে ইতিবাচক আছে। কিন্তু নেতিবাচকের সংখ্যাটা একটু বেশি। সবার মতো আমরাও একটু হতাশ। প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো হয়নি।' যোগ করেন তাসকিন।
সাত ম্যাচে তিন জয়, ফল বিবেচনায় একেবারে মন্দ না। এরচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য, এর আগে তারা কখনই তিনটি ম্যাচ জিততে পারেনি। এমন ফলের পরও এবারের বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের জন্য ব্যর্থ মিশন। কারণটা তাদের পারফরম্যান্স, লড়াই করার মানসিকতা। দল, ক্রিকেটারদের নিয়ে সবখানে সমালোচনার ঝড়।
সবচেয়ে বেশি সমালোচনা আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আসে সেমি-ফাইনালে ওঠার। এর জন্য আফগানিস্তানের দেওয়া ১১৬ রানের লক্ষ্য ১২.১ ওভারে তাড়া করতে হতো শান্ত-সাকিবদের। কিন্তু সেই চেষ্টাই করেনি বাংলাদেশ, স্বাভাবিক গতিতে ব্যাটিং করে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করে উল্টো ৮ রানে (বৃষ্টি আইনে) হারে দলটি। ১৯ ওভারে ১১৪ রান পাড়ি দিতে ব্যর্থ হন শান্ত-সাকিবরা।