৫০ বছর পরও '৭০ বিশ্বকাপই সেরা!
১৯৭০ সালের ২১ জুন। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রঙিণ পর্দায় সম্প্রচার হয় ফুটবল বিশ্বকাপ। কিন্তু এর চেয়েও বড় এক ঘটনা সেদিন রচিত হয়েছিল ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে।
বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই যেন আর্জেন্টিনার আকাশী নীল আর ব্রাজিলের হলুদ পতাকা নিয়ে উৎসব শুরু হয়ে যায়।
কিন্তু ১৯৭০ সালে পেলের পায়ের জাদুতে যে বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছিল ব্রাজিল, সেই জয়ে বোধহয় মুগ্ধ হয়ে গেছিলেন বিশ্বের সমস্ত ফুটবল্প্রেমীই।
এরকম জাদুকরী পারদর্শীতা নিয়ে হঠাৎ কখনো কখনো এক প্রজন্ম আসে হয়তো। ফুটবলে পটু ব্রাজিলিয়ানরা ৫ বার জিতে নিয়েছে বিশ্বকাপ। কিন্তু আজও ১৯৭০ সালের সেই জয়ের কিংবদন্তী মুখে মুখে ফেরে সবার।
সেবার ইতালির বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে জেতে ব্রাজিল। শেষ গোলটা এসেছিল পেলের পায়ের জাদুতেই। কিন্তু ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই পায়ে পায়ে গোলটা সাজিয়ে তুলে দিয়েছিলেন পেলের পায়ে। এটাই তো যেকোন খেলার মূল ভিত্তি- দলগতভাবে একটা লক্ষ্যের জন্য কাজ করা।
২০১৬ সালে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেলে বলেন, 'সেবারের বিশ্বকাপটা আমরা জিতেছিলাম। আমার খেলোয়াড় জীবনের সেরা পাওয়া ছিল সেটা।'
'সেবছর বিশ্বকাপ শুরু হবার আগে মেক্সিকোতে বসে আমি ভাবছিলাম এবার রিটায়ার করব। কিন্তু পরক্ষণেই আবার ভাবলাম, না এটাই আমার জীবনের শেষ বিশ্বকাপ। ঈশ্বর যেন আমাকে সেরা খেলাটা দেওয়ার সামর্থ্য দেন, সেই প্রার্থনা করলাম।'
ঈশ্বর যে তার সেই প্রার্থনা শুনেছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ব্রাজিলের সাবেক গোলকিপার দিদা, ২০০২ সালের বিশ্বকাপ জেতার দলে ছিলেন তিনি। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দিদা বলেন, 'আমি যখন ছোট, বাবা আমাকে ঐ ম্যাচটার কথা বারবার বলতেন। বাবা বলতেন ব্রাজিলের ফুটবলের ইতিহাসে এমন দল এর আগে কোনদিন আসেনি। সেই কিংবদন্তী দল চাইলেই যেকোন খেলা জিতে নিতে পারত, কারণ তারা ছিলেন সেরাদের মধ্যেও সেরা। আর এই দলের মধ্যমণি ছিলেন কিংবদন্তী খেলোয়াড় পেলে।'
দিদা বলেন, 'আমার চোখে ফুটবলের সেরা শক্তিমান খেলোয়াড় পেলে। এবং নিজের ক্যারিয়ারে ১ হাজারটা গোল করে তিনি সেটা প্রমাণও করেছেন।'
১৯৭০ সালে ব্রাজিল ফুটবল জেতার ৩ বছর পর দিদার জন্ম। কিন্তু বাবার কাছে গল্প শুনে শুনে এরাই তার কাছে মহানায়ক হয়ে উঠেছিলেন।
তবে শুধু ব্রাজিলিয়ানদের কাছেই নয়, পেলের জাদুকরী খেলায় মুগ্ধ হয়েছিলেন প্রতিপক্ষ ইতালিও। সেই ম্যাচে ইতালির ডিফেন্ডার ছিলেন তারসিসিও বুর্জনিখ। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, 'আমি ভেবেছিলাম আর সবার মতোই রক্ত-মাংসে গড়া খেলোয়াড় পেলে। কিন্তু পরে বুঝলাম আমি কতটা ভুল ছিলাম'।