কোভিড টিকা উৎপাদনে সিনোফার্ম-ইনসেপ্টার সঙ্গে সরকারের চুক্তি স্বাক্ষর
দেশেই চীনের সিনেফার্ম ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে চীনের সিনেফার্ম , স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দেশের অন্যতম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড - এর মধ্যে একটি সমঝােতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ।
সােমবার বিকাল ৫ টায় রাজধানীর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জন ( বিসিপিএস ) মিলনায়তনে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মােমেন, চীনের রাষ্ট্রদূত মি . লি জিমিং , মেজর জেনারেল মাে . মাহবুবুর রহমান , মহাপরিচালক , ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর , ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড - এর চেয়ারম্যান আব্দুল মুক্তাদির।
অনুষ্ঠানে চীনের সিনেফার্ম ভ্যাকসিন বাংলাদেশে যৌথভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে সিনেফার্ম , স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ইনসেপ্টা ভ্যাকসিনের পক্ষে যথাক্রমে সমঝোতা স্বাক্ষর করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক , চীনের রাষ্ট্রদূত মি . লি জিমিং এবং ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড - এর চেয়ারম্যান আব্দুল মুক্তাদির।
চুক্তি অনুযায়ী ইনসেপ্টা খুব শীঘ্রই টিকা উৎপাদন শুরু করবে।
অনুষ্ঠান শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আমরা আশা করি ৩ মাসের মধ্যে টিকা উৎপাদনে যেতে পারবে ইনসেপ্টা। সময় এর কমও লাগতে পারে আবার একটু বেশিও লাগতে পারে।
২০১১ সাল থেকেই ভ্যাকসিন তৈরি করে আসছে ইনসেপ্টা। করোনার ভ্যাকসিন উত্পাদনেও যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।
বাংলাদেশ সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনেছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসে ভ্যাকসিন দেশে আসছে। এখন পর্যন্ত দেশে সিনোফার্মের ১ কোটি ২৯ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে এসেছে। এর মধ্যে কেনা ৯১ লাখ, চীনের উপহারের ২১ লাখ ও কোভ্যাক্সের আওতায় দেশে এসেছে। চলমান ভ্যাকসিনেশনের কার্যক্রমের একটি বড় অংশ চলছে সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দিয়ে।
সংরক্ষণ সুবিধার কারণে সিনোফার্ম ভ্যাকসিন রাজধানী থেকে ইউনিয়ন পর্যায় সবখানে দেয়া হচ্ছে। দেশে এখন পর্যন্ত সিনোফার্মের অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছে ৭১ লাখ ৩১ হাজার মানুষ আর দুই ডোজ নিয়েছে ৩৮ লাখ ৮১ হাজার মানুষ।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই ভ্যাকসিনের প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়।
কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউট দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে ভ্যাকসিন সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
তখন সরকার অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করে। এপ্রিল মাসে দেশে সিনোফার্ম ও রাশিয়ার স্পুৎনিক-ভি ভ্যাকসিনের ইমার্জেন্সি ইউজ অথোরাইজেশন দেয়া হয়। চীন ও রাশিয়া থেকে কেনার পাশাপাশি দেশে যৌথ উৎপাদনের আলোচনাও তখনই শুরু হয়।