চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ২৬ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি: গবেষণা
চট্টগ্রামে পরিচালিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়া ৯০ শতাংশ রোগীর শরীরে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। বিপরীতে নেগেটিভ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২৬ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। এ অ্যান্টিবডি ৯ মাস পর্যন্ত রোগীর শরীরে কার্যকর থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
'চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি' শিরোনামে এই গবেষণাকর্মের নেতৃত্ব দেন সিনিয়র মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কোভিড-১৯ ওয়ার্ডের প্রধান ডা. আবদুর রব। শনিবার (৮ মে) দুপুরে জেনারেল হাসপাতালে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এ গবেষণায় অংশ নেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী, চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আসিফ খান, যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী এম এ কবির চৌধুরী, সহকারী সার্জন অমি দেব ও চিকিৎসা কর্মকর্তা মোরতাহিনা রশিদ।
ডা. আবদুর রব দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে গত এপ্রিল পর্যন্ত ছয় মাস ধরে মোট ছয় জন গবেষক এই গবেষণাকর্মে অংশ নেন। এতে দৈবচয়নের ভিত্তিতে আরটি–পিসিআর পরীক্ষায় পজিটিভ ও নেগেটিভ ফল আসা চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫৩০ জন ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর পাশাপাশি ঘরে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়াদেরও এই গবেষণা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।'
এ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানান, আরটি–পিসিআর পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হওয়া ও নেগেটিভ হওয়া মিলে ৬৫ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। তবে পজিটিভ হয়ে সুস্থ হওয়ার পর অনেকের শরীরে অ্যান্টিবডি ছিল না। পজিটিভ হওয়া ৯৪১ জনের মধ্যে ১০৭ জন এবং নেগেটিভ হওয়া ৫৮৯ জনের মধ্যে ৪৩৬ জনের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি। করোনা থেকে সেরে ওঠার পর ৯ মাস পর্যন্ত অনেকের শরীরে আ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আবার পজিটিভ অনেকের অ্যান্টিবডি ছিল না।
গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিডে আক্রান্তদের ৯২ শতাংশের জ্বর ছিল, কাশি ছিল ৬৩ শতাংশের, ঘ্রাণশক্তি লোপ পায় ৫২ শতাংশের। এ ছাড়া গলাব্যথা, মাথাব্যথা, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ ছিল। আক্রান্তদের ১৫ শতাংশের ডায়াবেটিস, ২৩ শতাংশের উচ্চ রক্তচাপ, ৯ শতাংশের শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা ও হৃদ্রোগ ইত্যাদি ছিল। এ ছাড়া এইডস ও ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও করোনায় আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়ার বিষয়টি গবেষণায় উঠে এসেছে। তাদের শরীরে অ্যান্টিবডিও পাওয়া গেছে।