বস্তিবাসীর শরীরে অ্যান্টিবডি বেশি: আইসিডিডিআর,বি
নগরের অন্যান্য স্থানে বসবাসকারীদের চেয়ে বস্তিবাসীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বেশি বলে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ'র (আইসিডিডিআরবি) একটি জরিপে উঠে এসেছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি এবং বস্তিসংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী ৩ হাজার ২২০ জনের নমুনা বিশ্লেষণে পাঁচ মাসের গবেষণায় ঢাকায় ৭১ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।
আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, এ গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বস্তি এবং বস্তির বাইরে বসবাসকারীদের রক্তে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি এবং তার সম্ভাব্য কারণ নির্ণয় করা।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩ হাজার ২২০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে চট্টগ্রামের তুলনায় ঢাকায় সেরোপজিটিভিটির হার বেশি। ঢাকায় ৭১ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে তা ৫৫ শতাংশ।
বস্তিতে এই হার ৭২ শতাংশ ,আর বস্তি সংলগ্ন এলাকায় ৬২ শতাংশ। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বয়স্ক ও তরুণদের সেরোপজিটিভিটির হার প্রায় সমান।
আবার পুরুষের তুলনায় নারীদের অ্যান্টিবডির হার বেশি। নারীদের মধ্যে অ্যান্টিবডির হার ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ আর পুরুষদের শরীরে অ্যান্টিবডির হার ৬৬ শতাংশ।
আইসিডিডিআরবি যে ওয়েবিনারে এই জরিপের ফলাফলের বিষয়ে জানিয়েছে, সেখানে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান জানান, করোনাভাইরাসের লক্ষণ উপসর্গ ছাড়াও অনেকে করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন। যে কারণে তাদের মধ্যে সেরোপজিটিভিটি তৈরি হয়েছে। তবে তা কেন হয়েছে তা নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, আমরা এই স্টাডি ছাড়াও আরও কয়েকটি স্টাডিতে একই প্যাটার্ন দেখেছি যে বস্তি এলাকার মানুষ ভাইরাসের সংস্পর্শে বেশি এসেছে। যে কারণে তাদের শরীরে অ্যান্টবডি তৈরি হযেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৯০ শতাংশই লক্ষণ-উপসর্গহীন হয়, সুতরাং বস্তিতে বেশি পাওয়ার এটা একটা কারণ।
হার্ড ইমিউনিটির বিষয়ে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, হার্ড ইমিউনিটি ডিজিজ টু ডিজিজ ভেরি করে। এটি জেনারেলাইজড করা যাবে না। কোবিঢ যেহেতু নতুন ডিজিজ তাই এখনো বলা যাচ্ছেনা অ্যান্টিবডি কত হলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা যাবে। যদিও কোভিডের শুরুতে WHO বলেছিলো ৭০% অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে ওঠে। কিন্তু এখন সে সিসুয়েশন দেখা যাচ্ছেনা।
তিনি বলেন, বস্তিতে সিভিয়ারিটি ও ডেথ কম কেনো তা নিয়ে আরো গবেষণা করতে হবে। বস্তিতে ইয়াং ও খেটে খাওয়া মানুষ বেশি থাকায় তারা কিছুটা সুবিধা পাচ্ছে। এ গবেষণাতেও দেখা গেছে যারা ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি করে তাদের মধ্যে সংক্রমণ কম দেখা গেছে।