বৈরী আবহাওয়ার কারণে রামপুরায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
বৈরী আবহাওয়ার কারণে আপাতত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ অবস্থা কেটে গেলে শিক্ষার্থীরা আবারও তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
তবে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণার আগে আজ রামপুরা ব্রিজে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত বৃষ্টির মধ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
আজকের কর্মসূচি শেষ করার আগে খিলগাঁও মডেল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
এসময় সোহাগী সামিয়া বলেন, "বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা আগামীকাল কোনো কর্মসূচি রাখছি না। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি আরও কয়েকদিন এরকম বৈরী আবহাওয়া থাকবে। যতদিন পর্যন্ত এই আবহাওয়া থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন স্থগিত থাকবে। তবে এটি কেটে গেলে আমরা আবার কর্মসূচি চালিয়ে যাব। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি আছে। একটি হচ্ছে মাইনুদ্দিনের স্কুল থেকে নাইমের কলেজ পর্যন্ত সাইকেল র্যালি করব। পরে নাইমের কলেজে গিয়ে আমরা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করব। অপরটি হচ্ছে, আমরা ছাত্র-শিক্ষক সবাই মিলে একটি সমাবেশ করব।"
আজ শিক্ষার্থীরা কেন মুখে কালো কাপড় বেঁধে নেমেছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে সোহাগী সামিয়া বলেন, "এর প্রথম কারণ হচ্ছে, আজ পর্যন্ত সড়কে যারা নিহত হয়েছেন দুর্ঘটনায় তাদের প্রতি শোক প্রকাশ করার জন্য আমরা কালো কাপড় বেঁধেছি। আর দ্বিতীয়ত, সরকারের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন করছি।"
তিনি বলেন, "আমাদের দাবি আদায় না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন করব। প্রয়োজন হলে আমরা আরও ২১ বছর আন্দোলন চালিয়ে যাব।"
আগের দিন সড়কের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করেন তারা।
গত ২৪ নভেম্বর সিটি কর্পোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন রাজধানীর নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান।
তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সেদিনই ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় 'ডিজিটাল বাংলাদেশ চাই না, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই', 'রক্তের কি দাম নেই?', 'আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?', 'যদি তুমি চুপ থাকো তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ'- ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাকার মহাসড়ক।
এ ঘটনার সপ্তাহ না পেরোতেই ২৯ নভেম্বর রাতে অনাবিল পরিবহনের একটি বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে রামপুরা বাজার সংলগ্ন সড়কে নিহত হয় একরামুন্নেসা স্কুলের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন। ঘটনার রাতেই বিক্ষুব্ধ জনতা রামপুরা এলাকায় অন্তত ৮টি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। মাইনুদ্দিনের মৃত্যুতে চলমান এই আন্দোলন আরও জোরদার হয়।
শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন যেন ২০১৮ সালের আন্দোলনেরই পুনরাবৃত্তি। সে বছর বাস চাপায় রাজধানীর রমিজউদ্দীন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতেও দেশজুড়ে চলে বিক্ষোভ সমাবেশ।