সাজা এড়াতে ১৯ বছর ছদ্মবেশে ছিলো ধর্ষণ মামলার আসামি
ধর্ষণের পর সাজা এড়াতে বিভিন্ন ছদ্মবেশে ১৯ বছর আত্মগোপনে ছিলো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অলি নবী ওরফে লাতু মিয়া। সম্প্রতি র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ রাজধানীর কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
২০০৩ সালে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পর লাতু মিয়া আত্মগোপনে চলে যায়। তখন থেকেই তার পলাতক জীবন শুরু হয়। ঘটনার পর সে চট্টগ্রাম গিয়ে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। কিন্তু পরে রিকশা চালানো ছেড়ে চুরি ও ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
একটি ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খাটেন তিনি। পরে জামিনে বের হয়ে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাসায় অতিথি হিসেবে জীবনযাপন শুরু করে। মাঝে মাঝে নিজ বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা করে টাকাপয়সা দিয়ে আসতো লাতু মিয়া।
কিছুদিন সিলেটের মাজারে ঘুরে বেড়ানোর পর এক পর্যায়ে এসে ঢাকায় এসে হকারিও শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে পড়ার শঙ্কায় সে রাজধানীতে দারোয়ানের চাকরি নেয়। পলাতক হিসেবে সে নিজেকে আলী নবী হিসেবে পরিচয় দিতো। মামলার রায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হওয়ার পর ঢাকায় একটি মাজারে আত্মগোপনে থাকতো লাতু মিয়া।
গ্রেপ্তারকৃত লাতুর বিরুদ্ধে ফেনী সোনাগাজী থানায় একটি ডাকাতি এবং ধর্ষণের মামলাসহ তিনটি মামলা রয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
২০০৩ সালের ১৩ মে গভীর রাতে সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ঘরের দরজা ভেঙে বিধবা মা ও ১৩ বছরের মেয়েকে বাইরে নিয়ে মায়ের মুখ বেঁধে তার সন্তানকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন লাতু মিয়া, ফারুক, আলমগীর ও আবুল কাশেম।
সে বছরের ১৩ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর ২০২২ সালের ১৪ জুলাই ১৯ বছর পর আদালত জাহাঙ্গীর আলম আবুল কাশেম ও লাতু মিয়ার বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামীকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। ফারুকের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়।