চট্টগ্রামে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার: পিবিআই
চট্টগ্রামে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিখোঁজের ৮ দিন পর বুধবার ভোরে পাহাড়তলী থানার পুকুরপাড়া মুরগীর ফার্ম এলাকার একটি ময়লার স্তুপ থেকে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া শিশুটির (১০) বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গত ২১ মার্চ আরবি পড়তে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোথাও না পেয়ে থানায় মামলার চেষ্টা করেন স্বজনরা, কিন্তু থানায় মামলা না নেয়ায় মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের নারী শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলার আবেদন করেন শিশুটির মা।
মামলায় মো. রুবেল নামের সবজি বিক্রেতাকে আসামি করা হয়। আবেদনের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক শারমিন জাহান পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সরাসরি এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার (এসপি) নাঈমা সুলতানা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'শিশুটি নিখোঁজের পর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে একজনকে আটক করে। তার দেখানো মতে পাহাড়তলী থানার আলমতারা পুকুরপাড়া মুরগীর ফার্ম এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়।'
'তাকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে রুবেল। এ সময় শিশুটি চিৎকার করায় শ্বাসরোধে হত্যা করে সে। পরবর্তী সময়ে মরদেহটি বস্তাবন্দির পর সবজির ঝুড়িতে করে রাতেই পুকুরপাড়া মুরগীর ফার্ম এলাকায় ফেলে দিয়ে যায়', বলেন এসপি নাঈমা সুলতানা।
বিষয়টি নিয়ে পাহাড়তলী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা মোছাম্মৎ বিবি ফাতেমা। বিচারক শারমিন জাহান অভিযোগ আমলে নিয়ে সরাসরি মামলা গ্রহণ করতে পাহাড়লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
বাদীর পক্ষে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন-এর পক্ষে অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান ও গোলাম মাওলা মুরাদসহ প্যানেল আইনজীবীরা।
অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, গত ২১ মার্চ স্কুলে যাওয়ার পথে শিশুটিকে বিড়ালছানা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় তরকারি বিক্রেতা মো. রুবেল অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনা সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে নিখোঁজের পর দুটি কন্যাশিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
২৪ অক্টোবর চিপস কিনতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় ৭ বছর বয়সী মার্জনা হক বর্ষা। এর তিনদিন পর নগরীর জামালখান এলাকায় একটি নালা থেকে বর্ষার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে লক্ষণ দাশ নামের এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। নিখোঁজের ৯ দিন পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িত সন্দেহে আয়াতের পরিবারের ভাড়াটিয়া আবির আলীকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে আয়াতকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছিলেন বলে আদালতে জবানবন্দি দেয় আবির। এরপর পিবিআইয়ের কয়েক দফা চেষ্টায় নগরীর আকমল আলী সড়কের আশেপাশে বিভিন্ন জলাশয় থেকে আয়াতের খণ্ডিত পা ও মাথা উদ্ধার করা হয়।