টেকনাফে অপহৃত ২৭ জনের ১৮ জন উদ্ধার, বাকি ৯ জনকে উদ্ধারে অভিযান চলছে
কক্সবাজারের টেকনাফের অপহৃত বনকর্মীসহ ১৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদার পশ্চিমের গহীন পাহাড় থেকে স্থানীয় জনতা ও বন বিভাগের সহায়তায় পুলিশ, র্যাব ও এপিবিএন সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। তারা গতকাল সোমবার সকালে পাহাড়ে গাছের চারা রোপণ করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন।
তবে সোমবার রাত ও মঙ্গলবার ভোরে অপহৃত বাকি ৯ জনকে এখনও উদ্ধার করা যায়নি। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুর রশিদ।
তিনি জানান, গতকাল সকালে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া পাহাড়ে বন বিভাগের জমিতে গাছের চারা রোপণ করতে গিয়ে বনকর্মীসহ ১৮ জন অপহরণের শিকার হন। পরে মুক্তিপণ চেয়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় বলে জেনেছেন তিনি।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, উদ্ধার ব্যক্তিদের পাহাড় থেকে বের করা হচ্ছে। তাদের থানায় আনা হলে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
গতকাল সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সীমান্ত পরিদর্শনে টেকনাফ যান। তিনি টেকনাফে অবস্থানকালীন ওই ১৮ জন অপহরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কে দুটি অটোরিকশা থামিয়ে চালকসহ ৮ জনকে অপহরণ করা হয় বলে জানান শামলাপুর সিএনজি অটোরিকশার লাইনম্যান মো. আবদুর রহিম।
তিনি বলেন, সকাল ৮টার দিকে হোয়াইক্যং থেকে শামলাপুরগামী দুটি সিএনজি অটোরিকশা হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কে পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা দুটি সিএনজির চালকসহ ৮ জনকে অপহরণ করে। তবে অপহৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার শাহা জানিয়েছেন, হোয়াইক্যং- শামলাপুর সড়কে দুইটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে চালকসহ যাত্রী অপহরণের ঘটনা শুনে অভিযান চালানো হচ্ছে। কতজন অপহরণ হলেন সেটার সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। সিএনজি দুইটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার রাত ১১ টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নেরবড় ডেইল এলাকার বাসিন্দার নাজিম উদ্দিন মাস্টারের ছেলে জসিম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানান বাহারছড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম।
তিনি জানান, সন্ত্রাসীরা ১৫-২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে নিজ মুদির দোকান থেকে জসিমকে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতর নিয়ে যায়।
জসিমকে উদ্ধারেও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার শাহা।
টেকনাফ থানার তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে ১৪টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৬৫। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩০ জনকে।