ট্রাম্পের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য হুমকি: ড. তৌফিক জোয়ার্দার
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ সারা পৃথিবীর জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ডব্লিউএইচও বিভিন্ন দেশের সরকারকে চিকিৎসা পণ্য, মেডিকেল কর্মী, রক্তদানসহ আরও অনেক ধরনের সহায়তা দেয়। বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য খাতে কারিগরি সহায়তাও দিয়ে থাকে সংস্থাটি। স্বাভাবিকভাবেই তাদের অর্থায়ন কমে গেলে এসব সহায়তা কমে যাবে।
এছাড়া আমরা স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তা পাচ্ছি; বিশেষত ইউএসএআইডি থেকে যথেষ্ট তহবিল পাই আমরা, যা অপুষ্টি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করে।
তবে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, এ ধরনের সকল তহবিল পর্যালোচনা করা হবে। অপ্রয়োজনীয় মনে হলে এগুলো পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
এই অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশেরও অনেক প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে।
গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন এনজিও এই অর্থায়নে পরিচালিত হয় এবং তৃণমূল পর্যায়ে সহায়তা দিয়ে থাকে। যদি এই তহবিল বন্ধ হয়ে যায়, তবে এই প্রজেক্টগুলো বন্ধ হয়ে যাবে এবং আবার কবে এই প্রকল্পগুলো শুরু হবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। এমনকি কিছু প্রকল্প স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য হবে এক বিশাল ধাক্কা।
ক্ষমতায় আসার প্রথম দিনেই নতুন মার্কিন প্রশাসন জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
প্রশাসন আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এমন যেকোনো বৈশ্বিক তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এটি বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের জনগণের জন্য হুমকিস্বরূপ। স্পষ্টত এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিবর্তনের প্রতিফলন।
আগে পররাষ্ট্রনীতির সীমাবদ্ধতার বাইরেও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বৈশ্বিক সহায়তা দিতো যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ ধরনের সহায়তা বন্ধ করা খোদ যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই বিব্রতকর। এটি বাংলাদেশ সরকারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে, যার ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে চলতে বাধ্য হবে। পরিণামে এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের সরকারই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।
আমি দুটি প্রধান সমস্যার কথা তুলে ধরছি: প্রথমত, ডব্লিউএইচও থেকে পাওয়া কারিগরি সহায়তা এবং দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক তহবিল বন্ধ হওয়ার বিষয়টি।
এছাড়া, যৌন ও মাতৃস্বাস্থ্য সহায়তার বিষয়টিও রয়েছে। রিপাবলিকানরা ক্ষমতায় আসলে এসব ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে।
ইউএসএআইডিতে কর্মরত পরিচিতদের কাছ থেকে আমি এ বিষয়টি প্রথম জানি।
তারা বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে তারা আর মাতৃস্বাস্থ্য, যৌন স্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশনের মতো একে পরস্পর সম্পর্কিত খাতে তহবিল দিতে পারত না। আর তাই এসব খাতে তহবিল বন্ধ হওয়ার ফলে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে।
ড. তৌফিক জোয়ার্দার, সহযোগী অধ্যাপক, গ্লোবাল হেলথ ইভালুয়েশন, সিঙ্গহেলথ ডিউক-এনইউএস গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউট