অপরাধীদের মতো আঙুলের ছাপ দিতে হবে ট্রাম্পকে? প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর করতে পারবেন?
এক পর্নো তারকাকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। দেশটির প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরকম অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন ট্রাম্প।
এ মামলায় ইতিমধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতেও বলা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর ট্রাম্পের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে, অন্য অপরাধীদের মতো তাকেও আঙুলের ছাপ দিতে হবে কি না, এবং তিনি আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে কি না—এসব উঠে এসেছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
গ্রেপ্তারের পর ট্রাম্পকেও কি অন্য অপরাধীদের মতো আঙুলের ছাপ দিতে হবে?
প্রসিকিউটরদের সঙ্গে আদালতের আলোচনার ভিত্তিতে ট্রাম্পকে অন্য আসামিদের মতো গণমাধ্যমের সামনে দিয়ে প্রকাশ্যে আদালতে প্রবেশ না-ও করতে হতে পারে। তাকে গোপনে আদালতে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
তবে আদালতে প্রবেশের পর ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত অন্য আসামিদের মতো ট্রাম্পের আঙুলের ছাপও নেওয়া হবে। তার মুখের ছবি তোলা হবে। ট্রাম্পকে 'মিরান্ডা রাইটস' পড়ে শোনানো হবে। এ আইনের আওতায় ট্রাম্প সাংবিধানিকভাবে একজন আইনজীবী নিয়োগ করার অধিকার পাবেন। পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে কথা বলতেও অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন।
ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত আসামিদের সাধারণত সাময়িকভাবে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়। তবে ট্রাম্পের আইনজীবীরা তার বেলায় এটি এড়ানোর চেষ্টা করবেন। পুরো প্রক্রিয়া চলাকালে সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা ট্রাম্পের সঙ্গে থাকবেন।
এরপর বিচারকের সামনে হাজির না করা পর্যন্ত ট্রাম্পকে হাজতখানা বা 'হোল্ডিং এরিয়ায়' আটক রাখা হবে। আদালতে আসামিরা যখন বিচারকের কাছে নিজেদের আর্জি পেশ করেন, তখন চাইলে সাধারণ মানুষও সেখানে হাজির থাকতে পারেন।
মামলা নথিভুক্ত ও বিচারক ঠিক হওয়ার পর বিচারকাজের সময় নির্ধারণ, আসামির ওপর সম্ভাব্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ, জামিন আবেদনসহ অন্যান্য কাজ করা হয়।
ছোটখাটো অপরাধের ক্ষেত্রে আসামিকে জরিমানা করা হয়। ট্রাম্প যদি ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। অবশ্য আইন বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ট্রাম্পের ক্ষেত্রে জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর তাকে কারাদণ্ড দেওয়ার সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে।
এরপরও কি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারবেন ট্রাম্প?
ট্রাম্প যদি অভিযুক্ত কিংবা দোষীও সাব্যস্ত হন, তবু তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়ে যেতে পারবেন। আর ট্রাম্পও ইঙ্গিত দিয়েই রেখেছেন, যা-ই ঘটুক না কেন, তিনি নির্বাচনের প্রচারকাজ চালিয়ে যাবেন।
আদতে প্রার্থী দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে না দেওয়া কিংবা প্রেসিডেন্ট হতে না দেওয়ার মতো কোনো আইনই নেই যুক্তরাষ্ট্রে। এমনকি কারাগারে থেকেও রাজনীতি করে যেতে কোনো বাধা নেই।
কাজেই ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে তাই আপাত কোনো বাধাই নেই।
যদিও ট্রাম্প গ্রেপ্তার হলে তার নির্বাচনী প্রচারণায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস অভিযোগ তলেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যাতে এ নিয়ে মুখ না খোলেন, সেজন্য ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন।