হাইতির সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা!
হাইতির সাবেক প্রধানমন্ত্রী লরেন্ট ল্যামোথেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন সরকার। শুক্রবার (২ জুন) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ল্যামোথের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। খবর আল-জাজিরার।
অ্যান্টনি ব্লিংকেন অভিযোগ করেন, "ল্যামোথে ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য হাইতি সরকারের পেট্রোক্যারিব অবকাঠামোর বিনিয়োগ ও সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে অন্তত ৬০ মিলিয়ন ডলারের অর্থ অপব্যবহার করেছেন।"
ব্লিংকেন আরও বলেন, "দুর্নীতি এবং তহবিল পরিচালনায় সরাসরি জড়িত থাকার মাধ্যমে ল্যামোথে একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে তার পদের অপব্যবহার করেছেন। একইসাথে হাইতির বর্তমান অস্থিরতার জন্যও দায়ী তিনি।"
লাতিন আমেরিকার দেশ হাইতিতে বর্তমানে অহরহ গ্যাং সহিংসতা এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশেষ করে ২০২১ সালে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোভনেল ময়েসকে হত্যার পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
ইউএস জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের প্রসিকিউটর ও হাইতির কর্মকর্তারা ময়েসের হত্যার বিচারে পদক্ষেপ নিয়েছেন। ময়েসকে হত্যায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে হাইতিতে বেশকিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও মোট ১১ জন সন্দেহভাজনকে হাইতির অভ্যুত্থান পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তবে হাইতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘটনা এই প্রথম নয়। গত এপ্রিলে মার্কিন সরকার হাইতির চেম্বার অফ ডেপুটিস এর সাবেক প্রেসিডেন্ট গ্যরি বোদেউর বিরুদ্ধেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এছাড়া মাদক চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে হাইতির সাবেক সিনেটর রনি সেলেস্টিন ও রিচার্ড লেনাইনের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। একইসাথে গত ডিসেম্বরে তৎকালীন হাইতি সিনেটের প্রেসিডেন্ট ইউরি লাটোরটুকের বিরুদ্ধে অর্থ ও মাদক পাচার এবং গ্যাং সহিংসতায় পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে একযোগে নিষেধাজ্ঞা দেয় কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র।
হাইতিতে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৬ সালে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষণা না করে ডিক্রি জারি করে দেশ শাসন করেন ময়েস।
বর্তমানে হাইতির ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকেও মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে ময়েস নিয়োগ দিয়েছিলেন। ভারপ্রাপ্ত এ প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালে নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো কোনো তারিখ নির্ধারণ করতে পারেনি।
হাইতিতে ক্ষমতা কাঠামোয় বিদ্যমান এ শূন্যতা গ্যাং সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে গত ডিসেম্বরে জানানো হয়, দেশটির রাজধানী পর্তোপ্রাঁসের প্রায় ৬০ ভাগ এলাকা গ্যাং এর নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ল্যামোথে মাত্র ২ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৪ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মাঝে পদত্যাগ করেন তিনি।