ধর্ষণের পর দ্বারে দ্বারে ঘুরে সাহায্যের আকুতি কিশোরীর, ভিডিও দেখে ক্ষুব্ধ ভারতীয়রা
ভারতের মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ীন শহরে এক কিশোরীকে ধর্ষণ এবং তার দোরে দোরে সাহায্য প্রার্থনার ভিডিও দেখে ক্ষোভে ফুঁসছে দেশটি।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রক্তাক্ত কিশোরী বিভিন্ন লোকের কাছে সহায়তা চাইছে, কিন্তু তাকে হাত নেড়ে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
শেষে এক হিন্দু পুরোহিত তাকে দেখতে পেয়ে সাহায্য করেন এবং পুলিশে খবর দেন।
মেয়েটি দুই ঘণ্টারও বেশি সময় সাহায্যের আশায় সড়কে হেঁটে বেড়াচ্ছিল। যদিও স্থানীয় গণমাধ্যমকে পুলিশ জানিয়েছে, কিছু লোক তার সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল।
উজ্জয়ীনের পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট শচিন শর্মা জানিয়েছেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশুটিকে যে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ ঘটনায় তারা পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তবে মেয়েটি এখন পর্যন্ত তার ঠিকানা সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেনি।
পুলিশ মেয়েটির প্রকৃত বয়সও নিশ্চিত করেনি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির দ্বারে দ্বারে সহায়তা চাওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ামাত্র শুরু হয় নিন্দার ঝড়।
সোমবারের সে ভিডিওতে দেখা যায়, মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় হাঁটছে। একপর্যায়ে এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে সাহায্য চায় সে। তবে উল্টো তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাকে।
সড়কে সাহায্যের জন্য বের হওয়ার আগে মেয়েটি কোন রুট থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, সেটি নির্ণয় করতে পুলিশ এলাকার অন্যান্য সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে।
শচিন শর্মা জানান, উজ্জয়ীন থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে সাতনা শহরে মেয়েটির বাড়ি বলে তারা জেনেছেন।
রাহুল শর্মা নামে এক ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের রিপোর্টে রাহুলকে পুরোহিত হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। রাহুল জানান, তিনি যখন মেয়েটিকে পান, তখনো তার রক্ত ঝরছিল।
"সে কোনো কথা বলতে পারছিল না; চোখ দুটোও ফুলে গেছিল", এনডিটিভিকে বলেন রাহুল।
"আমি জানতে চাইলাম, কী ঘটেছে। কিন্তু সে এমন কিছু বলছিল, যা আমি বুঝতে পারিনি। এরপর তাকে আমি কাগজ-কলম দেই কিন্তু সে কিছু লিখতেও পারছিল না।"
রাহুল মেয়েটিকে নিজের কিছু পোশাক দেন, এরপর পুলিশকে ফোন দিলে তারা এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গত বুধবার রাতে পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, মেয়েটির চিকিৎসা করানো হচ্ছে, এবং ইতিমধ্যে একটি সার্জারিও সম্পন্ন হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্রা জানিয়েছেন, মেয়েটির অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল।
এদিকে রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতারা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষমতায় থাকা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সমালোচনা করেছেন।
যদিও রাজ্য বিজেপির প্রধান ভিডি শর্মা বলেছেন, পুলিশ এ ঘটনায় 'কঠোর ব্যবস্থা নেবে' এবং 'অপরাধীরা পার পাবে না'।