ইলন মাস্ক ও পুতিনের কি নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে?
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ইলন মাস্কে বেশ জোরালোভাবে মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে আসছেন। এরই মাঝে গুঞ্জন রয়েছে যে, টেসলার এই প্রতিষ্ঠাতার সাথে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গত দুই বছর ধরে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউরোপের সাবেক বেশ কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে। এক্ষেত্রে তাদের আলাপচারিতায় ব্যক্তিগত বিষয় থেকে শুরু করে ভূরাজনৈতিক বিষয়গুলো উঠে আসে বলে দাবি করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে তাইওয়ানে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সার্ভিস চালু না করতে পুতিন মাস্ককে অনুরোধ করেছে। কেননা এতে করে রাশিয়ান মিত্র চীন সুবিধা পাবে।
এদিকে মাস্ক ও পুতিনের যোগাযোগের গুঞ্জনে পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করছে। কেননা স্পেসএক্সের এই প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রোগ্রামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। জনপ্রিয় মাইক্রো-ব্লগিং সাইট এক্সের মালিকানার পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধে তার স্টারলিংক স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ট্রাম্প যদিও আগামী ৫ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভ করে তবে মাস্ক মার্কিন প্রশাসনে বেশ ভালো প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। কেননা ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনে অর্থ প্রদানের পাশাপাশি নানা র্যালিতে অংশ নিয়ে নিজেকে সাবেক প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
চলতি মাসে সাংবাদিক বব উডার্ড তার প্রকাশিত বইয়ে জানান, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে পুতিনের সাথে ট্রাম্পের সাতবার প্রাইভেট ফোনকলের তথ্য তার কাছে রয়েছে। এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি রিপাবলিকান এই প্রার্থী। তবে তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের সাথে কথা বলা হলে সেটি হবে বরং এক বিচক্ষণতার কাজ।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী, মাস্ক ও পুতিনের মধ্যকার যোগাযোগ খুবই গোপনীয়তার মাধ্যমে সংঘটিত হয়ে থাকে। এমনকি বাইডেন প্রশাসনের অনেকেই এই সম্পর্কে অবগত নন।
মাস্ক এই রিপোর্ট সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি। অন্যদিকে ক্রেমলিন জানায়, টেসলা বস ও পুতিনের মধ্যে মাত্র একবার টেলিফোনে কথা হয়েছিল। সেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট মহাকাশ এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলেছেন। তবে নিয়মিত যোগাযোগে বিষয়টি একেবারেই অস্বীকার করা হয়েছে।
যদিও রিপোর্টে বলা হয়, পুতিনের সাথে মাস্কের ২০২২ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত যোগাযোগ রয়েছে। যাতে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন পুতিনের ফাস্ট ডেপুটি চিফ অব স্টাফ সার্গেই কিরিইয়েনতো। যাকে কি-না যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এক্স-সহ নানা মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।
২০২২ সালের অক্টোবরে মাস্ক 'ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি পরিকল্পনা' নামে একটি টুইট করেছেন। যেখানে মস্কোর অবস্থানই বেশি প্রতিফলিত হয়েছে বলে বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন।
মার্কিন কনসাল্টিং ফার্ম ইউরোশিয়া গ্রুপের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইয়ান ব্রিমার জানান, মাস্কই তাকে বলেছিল যে, তিনি পুতিনের সাথে ইউক্রেন ইস্যুতে সরাসরি কথা বলেছেন। যদিও মাস্ক এই দাবি অস্বীকার করেছেন। তবে কলোরাডোতে ঐ কনফারেন্সে উপস্থিত থাকা হিল অবশ্য ইয়ান ব্রিমারের দাবির পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান