রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চান সিরিয়ার নতুন নেতা আল-জোলানি
সিরিয়ার ইসলামপন্থি সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। সংগঠনের প্রধান আহমেদ হুসেইন আল-শারা, যিনি আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামেও পরিচিত, রোববার (২৯ ডিসেম্বর) আল-আরাবিয়া চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান।
জোলানি বলেন, তার সরকার রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার কথা বলবে না। তিনি বলেন, "আমরা চাই না রাশিয়া এমনভাবে সিরিয়া ত্যাগ করুক, যা দুই দেশের দীর্ঘ সম্পর্কের জন্য সম্মানজনক হবে না।"
সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো রাজধানী দামাস্কাসের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ পদত্যাগ করেন। এরপর রুশ সামরিক ঘাঁটিগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। রাশিয়া বর্তমানে সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত খামেইমিম বিমানঘাঁটি এবং তরতুস নৌঘাঁটি পরিচালনা করছে। ২০১৭ সালে দুই দেশের মধ্যকার এক চুক্তি অনুযায়ী, রুশ সেনারা ৪৯ বছর পর্যন্ত এসব ঘাঁটিতে থাকতে পারবে।
আল-জোলানি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা সিরিয়ার "কৌশলগত স্বার্থ"। নতুন সরকার বিদেশি শক্তির সঙ্গে যেকোনো সংঘাত এড়াতে চায়।
এই মাসের শুরুতে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, "সিরিয়ার নেতৃত্ব রাশিয়াকে উত্তেজিত করতে চায় না।" তারা চায় মস্কো এমন একটি সুযোগ পাক, যাতে দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করা যায়।
রোববার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানান, সিরিয়ায় রুশ সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে হওয়া চুক্তিগুলো বৈধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে স্বাক্ষরিত।
তিনি বলেন, ১ মার্চ পর্যন্ত চলা স্থানান্তরকাল শেষে রাশিয়া দামাস্কাসের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে সামরিক ঘাঁটিগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।
কিছুদিন আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, মস্কো "সিরিয়ার পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে থাকা শক্তিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছে" এবং সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।
অজ্ঞাত সূত্রের বরাতে টাস নিউজ জানায়, মস্কো সাময়িক নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেয়েছে। তাই সামরিক ঘাঁটিগুলো স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
নভেম্বরের শেষ দিকে এইচটিএস-এর নেতৃত্বে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আকস্মিক হামলা চালিয়ে সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নেয়। তারা রাজধানী দামাস্কাসেরও দখল নেয়। দ্রুত অগ্রগতি দেখে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা হতবাক হন। প্রেসিডেন্ট আসাদ পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।