‘এক নেতা চলে গেলে আরেকজন আসবেন’: হামাস নেতা হানিয়ার শেষ কথা
যেন তিনি জানতেন, তার সময় শেষ হয়ে আসছে! ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনির সাথে জীবন, মৃত্যু এবং প্রতিরোধ সম্পর্কিত কোরানের এক আয়াত নিয়ে কথা বলেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, "আল্লাহ জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু জানেন। এক নেতা চলে গেলে আরেকজন আসবেন।"
বুধবার (৩১ জুলাই) ইরানের রাজধানী তেহরানে হত্যা করা হয় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শাখার শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়াকে। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন হানিয়া।
হানিয়াকে হত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায় দেওয়া হলেও দেশটি দায় স্বীকার করেনি।
আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে হানিয়ার এই কথোপকথন সম্প্রচার করা হয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে। সেখানে হানিয়া তার ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে কথা বলেন, যা তার জীবন এবং ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের যুদ্ধের রূপ কেমন হবে তা অনেকাংশেই নির্ধারণ করেছিল।
হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদে ইয়াসিন সম্পর্কেও বলেন হানিয়া। ১৯৮০-এর দশকে ইয়াসিনের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়ার কথা বলেন তিনি। ইসরায়েল সরকার ইয়াসিনকে বন্দি করার পর ২০০৪ সালে তাকে হত্যা করলেও হামাসের শক্তি বৃদ্ধি থামেনি।
আশির দশকে রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে হামাসের উত্থানের সময় সামনের কাতারে ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ১৯৮৯ সালে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং ১৯৯২ সালে আরও কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে তাকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয়।
এক বছর নির্বাসনে থেকে ইসমাইল হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন। তিনি হামাসের প্রতিষ্ঠাতা ও মতাদর্শিক গুরু শেখ ইয়াসিনের ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্ব পাওয়ার পর হামাসে তাঁর পদমর্যাদা বাড়ে।
তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাতার এবং তুরস্ক থেকে হামাসের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং গাজা যুদ্ধের অবসান ও জিম্মি পরিস্থিতি মোকাবেলায় আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।