নারায়ণগঞ্জে তর্ক করায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চালককে মারধর ও বাস ভাঙচুরের অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে তর্ক করায় বাসচালককে পিটিয়ে ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপির বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে বাসটিও ভাঙচুর করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নয়ন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী আসিয়ান এসি বাসের চালক। মারধরে আহত হলে তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অন্যদিকে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর।
বাসচালক নয়ন অভিযোগ করে বলেন, 'আমি গুলিস্থান থেকে গাড়ি চালিয়ে আসছিলাম। সায়েদাবাদে যানজটে থাকা অবস্থায় হঠাৎই গাড়ির সামনে একটি মোটরসাইকেল এসে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে তৎক্ষণাৎ ব্রেক করি। এতে যাত্রীদের ঝাঁকি লাগে। তখন ওই নেতা বলেন, কেমনে গাড়ি চালাস? এ নিয়ে তর্ক হলে তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।'
তিনি আরও বলেন, 'বাস সাইনবোর্ড এলাকা অতিক্রম করে সানারপাড় ইউটার্ন এলাকায় পৌঁছালে বিএনপি নেতার ২৫-৩০ জন কর্মী এসে গাড়ির গতিরোধ করে। তারা আমাকে লাঠি দিয়ে পেটায় ও ইট মেরে গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেয়। এতে কাঁচের আঘাতে আমার মাথা কেটে যায়। পরে বিএনপি নেতার কাছে মাফ চাওয়ায় তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। আমাকে মারার প্রতিবাদ করলে এক যাত্রীকেও মারধর করে তারা। পরে আমার হাতে তার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলে পারলে কিছু করিস।'
মিনহাজ আমান নামে এক যাত্রী অভিযোগ করেন, বাস ভাঙচুর করতে বাধা দেওয়ায় তাকেও লাঞ্চিত করা হয়। তিনি বলেন, 'বাসচালকের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপি নেতা। সানারপাড়ে বাস ভাঙচুরের সময় আমি তাকে বলি এটা ঠিক হচ্ছে না। এ কথা শুনে তার লোকজন আমার গলা চেপে ধরে। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে ইকবাল বলেন, আপনি কি করবেন কইরেন।'
এ বিষয়ে ইকবাল হোসেন বলেন, ''গাড়ির ড্রাইভার বাজে আচরণ করেছে। ওকে ভালোভাবে গাড়ি চালাতে বলায় আমাকে বলে 'আপনি গাড়ি চালান'। আমি বলেছিলাম সাইনবোর্ড রাখ, তোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমার চিন্তা ছিল কানে ধরিয়ে ছেড়ে দেব। কিন্তু উপস্থিত জনতা তো আর এটা বোঝে না।''
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, 'আমরা সাংবাদিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'