রিশাদের স্পিন আর খালেদের পেসে ভুগলো ক্যারিবীয়রা
প্রভাতের সূর্যদয়ই দিনের পূর্ভাবাস দিয়ে দেয়; এই কথাটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বেলায় খাটছে না। ভালো শুরুর পরও সফরকারীদের শেষটা হলো বিবর্ণ। বিসিবি একাদশের বিপক্ষে তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম সেশনে দারুণ ব্যাটিং করেও দিক হারালো। তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ও পেসার খালেদ আহমেদের বোলিং তোপে ব্যাট হাতে বেশি পথ পাড়ি দেওয়া হলো না উইন্ডিজের।
২৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ২৫৭ রানে অলআউট হয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান্স। বিসিবি একাদশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ২৩.১ ওভার বোলিং করা লেগ স্পিনার রিশাদ নিয়েছে পাঁচ উইকেট। খালেদ পান তিন উইকেট। পরে বাংলাদেশ ৩০ মিনিটের মতো ব্যাটিং করে বিনা উইকেটে ২৪ রান করেন। সাইফ হাসান ১৫ ও সাদমান ইসলাম অনিক ৩ রানে অপরাজিত আছেন।
রিশাদ-খালেদের দারুণ বোলিংয়ের মাঝেও লড়াই চালিয়েছেন ক্যারিবীয়দের টেস্ট অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। ১৯৭ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। সফরকারী দলের আরও কয়েকজন ব্যাটসম্যান মাঝারি ইনিংস খেলেন। জন ক্যাম্পবেল ৪৪, শেন মোসলে ১৫, জশুয়া ডা সিলভা ২০, কাইল মেয়ার্স ৪০ ও আলজারি জোসেফ ২৫ রান করেন।
উইন্ডিজের শুরুটা ভালোই হয়। দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন ব্রাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল। উদ্বোধনী জুটিতে ৬৭ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ৪৪ রান করা ক্যাম্পবেলকে বিদায় করে এই জুটি ভাঙেন বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য শাহাদাত হোসেন দিপু।
প্রথম উইকেট হারিয়ে ছন্দ হারায় ক্যারিবীয়রা। গুছিয়ে ওঠার আগেই তাদের চেপে ধরেন বিসিবি একাদশের বোলাররা। মনে হয়েছিল শেন মসলে মানিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তাকে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে দেননি লেগ স্পিনার রিশাদ আহমেদ। ১৫ রান করা মসলেকে বোল্ড করেন তরুণ এই লেগ স্পিনার।
কিছুক্ষণ পর বল হাতে তোপ দাগেন ডানহাতি পেসার খালেদ আহমেদ। এক্সট্রা বাউন্সের ফাঁদে ফেলে এনক্রুমাহ বোনারকে ফেরান তিনি। লাফিয়ে ওঠা বলে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন বোনার। কিন্তু বল তার ব্যাট ছুঁয়ে প্রথম স্লিপে চলে যায়। ঝাঁপিয়ে পড়ে এক হাতে ক্যাচ নেন বিসিবি একাদশের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
জার্মেইন ব্ল্যাকউডকেও টিকতে দেননি রিশাদ হোসেন। উইন্ডিজ সহ-অধিনায়ককে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তরুণ এই লেগ স্পিনার। কিছুক্ষণ পর কাভেম হজকে ফেরান খালেদ। এরপর ক্যারিবীয়দের তিন ব্যাটসম্যান ডা সিলভা, মেয়ার্স ও জোসেফ দলকে পথ দেখান। ডা সিলভার উইকেটটি কেবল সাইফ হাসান নেন। পরের তিন উইকেটই ঝুলিতে পোড়ন রিশাদ।
বাংলাদেশে সব সময়ই স্পিনের বিপক্ষে ধুঁকতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে মিরাজ, তাইজুলদের স্পিন বিষে নীল হতে হয়েছিল তাদেরকে। দুই টেস্টে ৪০ উইকেট নেন স্পিনাররা। এবারও যে তাদের স্পিনের বিপক্ষে ধুঁকতে হবে, তা আগেই জানা গেল। আর সেটাও আনকোরা স্পিনের বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (প্রথম দিন শেষে)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৫৭ (ব্রাথওয়েট ৮৫, ক্যাম্পবেল ৪৪, মোসলে ১৫, বোনার ২, ব্ল্যাকউড ৯, হজ ০, ডা সিল্ভা ২০, মেয়ার্স ৪০, জোসেফ ২৫, রোচ ৫*, গ্যাব্রিয়েল ৪; খালেদ ৩/৪৬, মুগ্ধ ০/৩৬, শাহিন ০/৩৯, দিপু ১/২৯, রিশাদ ৫/৭৫, সাইফ ১/২৬)।
বিসিবি একাদশ: ৮ ওভারে (সাইফ ৯,* সাদমান* ৩; রোচ ০/৫, গ্যাব্রিয়েল ০/৮)।