কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘুষ কেলেঙ্কারির তদন্ত শেষ হওয়া অনিশ্চিত
পিকে হালদার ইস্যুতে এস কে সুর ও শাহ আলমের ঘুষ কেলেঙ্কারি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত কবে নাগাদ শেষ হবে তা অনিশ্চিত।
১৫ মে নির্ধারিত তিন মাস সময় পার হলেও নতুন করে সুনির্দিষ্ট কোন সময় বাড়ানো হয়নি। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় তদন্ত কমিটির তদন্তে ব্যাঘাত ঘটেছে।
নির্ধারিত সময় পার হলে গেলেও নতুন করে কমিটিকে কোন সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়নি। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যেই কমিটি তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিবে বলে তিনি জানান।
তদন্ত শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আদালতের আদেশ অনুযায়ী পিপলস লিজিং এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) এর অনিয়মের তদন্ত করতে হবে।
এই দুটি প্রতিষ্ঠানের তদন্ত করার ক্ষেত্রে আদালত থেকে সুনির্দিষ্ট কোন সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়নি। সুবিধাজনক সময়সীমার কথা বলা আছে। সে হিসেবে তদন্ত কমিটির সামনে কোন বাঁধাধরা সময় দেয়া নেই।
পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ অন্তত পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা লুট করেছেন প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এসব অর্থ লুটের তথ্য চাপা দিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিম।
এসব অনিয়মের সহায়তা করতেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম। বিনিময়ে পেতেন আর্থিক সুবিধা। ঘুষের বিনিময়ে এসব অনিয়মে সহায়তা করেছেন আরও কয়েকজন কর্মকর্তা।
ইন্টারন্যাশাল লিজিং এর সাবেক এমডি রাশেদুল হক আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দেয়ার পর শাহ আলমকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে সরিয়ে দেয়া হয়।
এরপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং (কারণ উদঘাটন) কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কমিটি তিন মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা দিতে পারেনি।
ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খানকে প্রধান করে ৫ সদস্যদের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে ধরনের অনিয়ম ও লুটপাট হয়েছে, ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না হয় এ জন্য কমিটি পরামর্শ দিবে।
দেশে বর্তমানে ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ১০টির অবস্থা নাজুক। পি কে হালদার একাই ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস লিজিং, এফএএস ফাইন্যান্স ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) এই চারটি প্রতিষ্ঠানকে ডুবিয়েছেন।