রেজিস্ট্রেশন ও এসএমএস ছাড়াও পাওয়া যাবে কোভিড ভ্যাকসিন
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবার ভ্যাকসিন নিশ্চিতে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি আরও সহজ করছে সরকার। এখন থেকে ভ্যাকসিন পেতে রেজিস্ট্রেশন না করলে কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন না থাকলেও ভ্যাকসিন নেয়া যাবে। এছাড়া ভ্যাকসিন পেতে রেজিস্ট্রেশন করার পরও যারা মেসেজ পাননি তারা সেন্টারে গেলে ভ্যাকসিন পাবেন। প্রান্তিক মানুষদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতেও দুই মাসব্যাপী বিশেষ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট প্রগ্রামের সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
ডা. শামসুল হক বলেন, "প্রান্তিক মানুষদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে শনিবার থেকে মেগা ক্যাম্পেইনের আওতায় ওয়ার্ড পর্যায়ে ইপিআই কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আগামী দুই মাসে সাড়ে তিন কোটি মানুষকে ভ্যাকসিনের ফার্স্ট ডোজ দেয়া হবে। পরে আবার বিশেষ ক্যাম্পেইন করে সেকেন্ড ডোজ দেয়া হবে।"
"দেশের ৪ হাজার ৬১১টি ইউনিয়নে মোট ১ লাখ ১০ হাজার ৬৪৬ কেন্দ্রে এই টিকা দেয়া হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০-৪০০ ডোজ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই ক্যাম্পেইনে শুধু প্রথম ডোজ দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদেরকে বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে", বলেন ডা. শামসুল হক।
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মেডিকেল কলেজে ভ্যাকসিন দেয়ার মাধ্যমে দেশে ভ্যাকিসিনেশন কার্যক্রম চালু হয়। পরে পর্যায়ক্রমে জেলা, উপজেলা হাসপাতাল থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকেও ভ্যাকসিন দেয়া হয়।
ডা. শামসুল হক বলেন, "আমরা দেখেছি একটা ইউনিয়নে একটা কমিউনিটি ক্লিনিক থাকে। তাই সব ওয়ার্ডের মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় আসেনি। যে ওয়ার্ডের মানুষ টিকা কেন্দ্র বাড়ি থেকে দূরের কারণে, টিকা কার্ড না থাকার কারণে টিকা পায়নি তারা এখন ইপিআইয়ের সাব ব্লক টিকা কেন্দ্রে টিকা পাবে। এই সাব ব্লকগুলো সবাই চেনে। এগুলোতে বাচ্চাদের নিয়মিত টিকা দেয়া হয়। সেখানেই সপ্তাহে তিন দিনব্যাপী কোভিডের টিকা দেয়া হবে। ইপিআই সেন্টারে কোভিড ভ্যাকসিন দিতে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে মানুষকে জানানো হবে।"
এতোদিন কোভিড ভ্যাকসিন পেতে সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে হতো। আর রেজিস্ট্রেশন না করা থাকলে গণটিকা ক্যাম্পেইনে এনআইডি বা বার্থ সার্টিফিকেট নিয়ে গিয়ে ভ্যাকসিন নেয়া যেতো।
ওয়ার্ডে ভ্যাকসিনেশনের এই ক্যাম্পেইনে এনআইডি বা বার্থ সার্টিফিকেট না থাকলেও ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন ডা. শামসুল হক। তিনি বলেন, "রেজিস্ট্রেশন না করা থাকলে এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন কার্ড দেখিয়ে, সেটি না থাকলে চেয়ারম্যান বা মেম্বারের সার্টিফিকেট দিয়ে টিকা নেয়া যাবে। তাও না থাকলে স্থানীয় কেউ টিকাগ্রহীতাকে চিহ্নিত করে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিলে আমরা ভ্যাকসিন দিয়ে দিবো।"
মেগা ক্যাম্পেইনের আওতায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্টাজেনেকা, সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
ব্রিফিংয়ে শামসুল হক আরও বলেন, রেজিস্ট্রেশন করার পর প্রথম ডোজের জন্য যারা এসএমএস পাননি তারা টিকা কার্ড নিয়ে ক্যাম্পেইন সেন্টার বা রুটিন টিকাদান কেন্দ্রে গেলেও ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত দেশে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে মোট ৭ কোটি ৩৭ লাখ এবং দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে ৫ কোটি ১৮ লাখ; পাশাপাশি বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৪৩ হাজার মানুষ।