ব্যাটিং দুর্দশায় চেনা পরিণতি বাংলাদেশের
বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচ মানেই যেন পুরনো 'রেকর্ড' বাজানো। ব্যাটিং ব্যর্থতার ফাঁক ফোকরে দুই-একটা ভালো ইনিংস আর বোলারদের একটুখানি লড়াই, কিন্তু শেষটা সেই হার দিয়েই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথমে টেস্টেও তাই হলো। অ্যান্টিগা টেস্টে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় বোলারদের দারুণ লড়াই তেমন কাজেই এলো না। চতুর্থ দিনেই হার মেনে নিতে হলো সাকিব আল হাসানের দলকে। ৭ উইকেটের বড় হারে ক্যারিবীয় সফর শুরু হলো বাংলাদেশের।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ থেকেই হারের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য যে ক্যারিবীয়দের দরকার ছিল মাত্র ৩৫ রান। তবু কিছুটা আনন্দ নিয়েই দিনটা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। মাত্র ৮৪ রানের লক্ষ্য দিয়েও বল হাতে স্বপ্নের শুরু করে সফরকারীরা।
আগুন ঝরা বোলিংয়ে মাত্র ৯ রানের মধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নেন খালেদ আহমেদ। যদিও বাংলাদেশের ডানহাতি এই পেসারের তোপ সামলে নিতে বেশি সময় লাগেনি ওপেনার জন ক্যাম্পবেল ও জার্মেইন ব্ল্যাকউডের। শুরুর ঝড় থামলে ৪০ রানের জুটি গড়ে দিনের খেলা শেষ করেন তারা। চতুর্থ দিনে তারাই খেলা শেষ করেন হেসেখেলে, তাদের জুটি থেকে আসে ৭৯ রান। লক্ষ্যে পৌঁছাতে ক্যারিবীয়দের লাগে ২২ ওভার।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। ক্যারিবীয় পেসারদের তোপের মাঝে সাকিব ৫১ রান করলেও মাত্র ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশেরর ইনিংস। যা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসেই ১৬২ রানের বড় লিড পেয়ে যায় স্বাগতিকরা।
তাই দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক সাকিব ও নুরুল হাসান সোহানের হাফ সেঞ্চুরিতে ২৪৫ রান তুললেও বড় লিড পায়নি বাংলাদেশ। ৮৪ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ক্যারিবীয়দের। যা পাড়ি দিতে নেমে শুরুতে রালেও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়নি ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের দলের। ৩ উইকেটে ৪৯ রানে তৃতীয় দিন শেষ করা দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ক্যাম্পবেল ৫৮ ও ব্ল্যাকউড ২৬ রান করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ক্যারিবীয়দের যাওয়া ৩টি উইকেটই নেন খালেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১০৩
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ২৬৫
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ৯০.৫ ওভারে ২৪৫/১০ (তামিম ২২, জয় ৪২, শান্ত ১৭, লিটন ১৭, সাকিব ৬৩, সোহান ৬৪, মুস্তাফিজ ৯; রোচ ৫/৫৩, জোসেফ ৩/৫৫, মেয়ার্স ২/৩০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস: লক্ষ্য ৮৪, ২২ ওভারে ৮৮/৩ (ক্যাম্পবেল ৫৮*, ব্ল্যাকউড ২৬*; খালেদ ৩/২৭, মুস্তাফিজ ০/৭, সাকিব ০/৩)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: কেমার রোচ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে