‘বনকাগজ’-এর শুভ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
'বাংলা ক্যালান্ডারের সাথে আমাদের সম্পর্কটা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। আগে ছাপা পত্রিকা ঘরে আসত। তা থেকে বাংলা তারিখ জেনে নেওয়া যেত। এখন সেটা নেই। প্রয়োজনে গুগলকে জিজ্ঞাসা করতে হয়। ব্যাপারটা পীড়া দেয়। সে জায়গা থেকে ক্যালেন্ডার করার কথা ভাবা। তাছাড়া ফাল্গুন, চৈত্র, পৌষ, মাঘ ও অগ্রহায়ণের মতো মায়াবী নামগুলো আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহৃত শব্দতালিকা থেকে সরে যাচ্ছে বা গেছে, এটাও কষ্ট দেয়। এটাও একটা তাড়না।'
'বনকাগজ'-এ বাংলা বর্ষপঞ্জিকা তৈরির বিষয়ে কথাগুলো বলছিলেন 'হরপ্পা'র স্বত্বাধিকারী সাদিকা রুমন। হরপ্পা একটি ফেসবুকভিত্তিক পেজ। এটি দেশি গয়নাসহ বিভিন্ন দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য বিক্রি করে থাকে। এবার এটি বনকাগজে বাংলা বর্ষপঞ্জিকা তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য, বনকাগজ হলো বিশেষ এক ধরনের কাগজ। পুরনো কাগজ রিসাইকেল করে এটি উৎপাদন করা হয়। পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শালবৃক্ষ কাগজটি তৈরি করে থাকে। এ কাগজের ভেতরে থাকে গাছের বীজ। কাগজটি ছয় মাসের মধ্যে মাটিতে পড়লে সেখান থেকে গাছ জন্মাবে।
বনকাগজে বর্ষপঞ্জিকা তৈরির বিষয়ে সাদিকা রুমন বলেন, এ কাগজে বর্ষপঞ্জিকা করার মধ্য দিয়ে অন্তত দু'টো কথা বলা গেছে। এক. বাংলা বছর মানে কেবল নববর্ষ নয়। দুই. আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের জায়গা থেকে প্রকৃতি ও পরিবেশের কথা ভাবা উচিত।
তিনি আরও বলেন, 'এটা ঠিক যে ১৩ পৃষ্ঠার ছোট একটা বর্ষপঞ্জিকায় ব্যবহৃত বনকাগজ পৃথিবীতে বনায়ন করে ফেলবে না। কিন্তু পরিত্যক্ত কাগজ রিসাইকেল করে কাগজ তৈরি হচ্ছে, সেই কাগজ মাটিতে পড়লে গাছের জন্ম হচ্ছে, এ তথ্য মানুষকে জানানো জরুরি।
তিনি জানান, বনকাগজ উৎপাদনের খরচ বেশি, তাই ক্যালেন্ডারের দামও কিছুটা বেশি। কিন্তু, প্রকৃতি-পরিবেশ ও বাংলা মাসের প্রতি দায় থেকে এ ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছে।