কোভিড নিয়ে অধিকাংশ ভুল তথ্য প্রচারের নেপথ্যে রয়েছেন ১২ ব্যক্তি!
চলতি সপ্তাহে কোভিড সম্পর্কিত ভুল তথ্য প্রচার নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউজ। তাদের ভাষ্যমতে, সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেইটের (সিসিডিএইচ) এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে, ভ্যাকসিন বিরোধী তথ্য প্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক অধিকাংশ কার্যক্রমের পেছনে মূলত ১২ জন ব্যক্তি দায়ী।
সিসিডিএইচ একটি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অলাভজনক ও বেসরকারি সংস্থা। গত মার্চে তারা কোভিড সম্পর্কিত ভুল তথ্য প্রচারকারী ১২ জন অনলাইন ব্যক্তিত্বকে খুঁজে বের করে এবং তাদেরকে একত্রে 'ডিসইনফরমেশন ডজন' বলে আখ্যা দেয়।
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ১২ জন ব্যক্তির সব মিলিয়ে প্রায় ৫৯ মিলিয়ন অনুসারী রয়েছে।
এর মধ্যে ফেসবুকের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। সিসিডিএইচ এই এক ডজন মানুষের ৮ লাখ ১২ হাজার ফেসবুক পোস্ট এবং টুইট বার্তা বিশ্লেষণ করে দেখেছে, ৬৫ শতাংশ ভুল বা বিকৃত তথ্য তাদের কাছ থেকেই এসেছে।
এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল বিবেক মূর্তি ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ভুল তথ্য প্রচার থামানোর দিকে নজর দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও নিয়ন্ত্রক এজেন্সিগুলো ভ্যাকসিনকে নিরাপদ ও কার্যকরী ঘোষণা করলেও শুধুমাত্র ফেসবুকে এই ডজনখানেক ব্যক্তি ৭৩ শতাংশ ভ্যাকসিন-বিরোধী প্রচারণার জন্য দায়ী।
এছাড়াও, ভুল তথ্য সম্বলিত এসব কন্টেন্টের ৯৫ শতাংশই ফেসবুক থেকে সরানো হয়নি।
এই এক ডজন ব্যক্তির মধ্যে চিকিৎসকও আছেন, যিনি ভণ্ড বিজ্ঞানকে বেছে নিয়েছেন। আরও রয়েছেন বডিবিল্ডার, ব্লগার, ধর্মান্ধ ব্যক্তিবর্গ।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে আছেন জন এফ কেনেডির ভাগ্নে রবার্ট এফ জেনেডি। রবার্ট ভ্যাকসিন নেয়াকে অটিজমের সাথে এবং ফাইভজি ব্রডব্যান্ড সেলুলার নেটওয়ার্ককে করোনাভাইরাস মহামারির সাথে তুলনা করেছেন।
সিসিডিএইচের সিইও ইমরান আহমেদ এক প্রতিবেদনে লিখেছেন, "ফেসবুক ও টুইটার ভ্যাকসিন-বিরোধী ভুল তথ্য প্রচার ঠেকাতে বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ করলেও, আসলে তারা এগুলো থামাতে ব্যর্থ হয়েছে।"
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলো বিভিন্ন পোস্ট সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছে। এমনকি এই বারো জনের তিনজনকে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সিসিডিএইচ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ও ইউটিউবকে আহ্বান জানিয়েছে, এই এক ডজন ব্যক্তিত্বকে যেন পুরোপুরিভাবে সব প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
কারণ হিসেবে তারা বলে, "সিসিডিএইচ এর বিশ্বাস, উল্লেখিত ব্যক্তিরা বিপজ্জনক এবং মহামারির সংকটকালে জনসাধারণের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি করছে।"
প্রতিবেদনে বলা হয়, "প্রয়োজন অনুসারে কঠোরভাবে আরোপ করা না হলে নীতিমালা প্রণয়ন করে কোনো লাভ নেই। জনসাধারণের জন্য বিপজ্জনক ব্যক্তিদের প্রচারিত কন্টেন্ট ও আইডি সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে ভুল তথ্য যাওয়া প্রতিহত করা সম্ভব হবে।'
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান