মানুষের বাচ্চা যেখানে পোষা কুমিরের খাবার!
জানা যায়, অখণ্ড ভারতে এক কালে এক জমিদার ছিলেন, নাম শিউনন্দন সিংহ। ডালটনগঞ্জ ও পালামুঁর মাঝামাঝি এক তালুকের সর্বেসর্বা ছিলেন তিনি। তার প্রকাণ্ড প্রসাদে ছিল বিরাট এক পুকুর। সেই পুকুরে তিনি পুষতেন দুটি কুমির।
কিংবদন্তি আছে, সারা সপ্তাহ উপোষ রাখা হতো কুমির দুটিকে। খিদের জ্বালায় ছটফট করত হিংস্র ওই প্রাণীগুলো। প্রতি শনিবার বিকেলে দোতলার ব্যালকনিতে এসে আয়েশ করে বসতেন জমিদার। পাশে থাকত তার অনুচরেরা।
সেদিনই শুধু খাবার জুটত কুমিরের মুখে। মোরগ, খরগোশ থেকে শুরু ছোট ছাগল পুকুরে ছুড়ে দিতেন জমিদার। ক্ষুধার্ত কুমিরগুলো হামলে পড়ত খাবারের ওপর। আর তা দেখেই পুলক হতো জমিদারের।
রাত যত বাড়ত, বীভৎস উল্লাস ততই বাড়ত জমিদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের। নানা রকম খাবার ছুড়তে ছুড়তে এক সময় আসত সেই ভয়ঙ্কর ক্ষণ। যখন 'তুরুপের শেষ তাস'টি ব্যবহার করতেন শিউনন্দন। কুমিরের মুখে সপ্তাহের শেষ খাবার হিসেবে ছুড়ে দিতেন কোমলমতি শিশুদের!
বিহারের সেই জমিদারের পৈশাচিক এই 'রেওয়াজে'র খবর ওই অঞ্চলের মানুষের মুখে মুখে। এখনো ওখানকার নারীরা দুধের শিশুদের ঘুম পাড়ান শিউনন্দনের ভয় দেখিয়ে!
ভারতীয় তথ্যচিত্র নির্মাতা সৌমিত্র ঘোষ দস্তিদার এ গল্পের খোঁজ পেয়েছেন এক মাওবাদী গেরিলার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে। পরে এক সাংবাদিকের কাছেও শুনেছেন ভয়ঙ্কর শিউনন্দনের আখ্যান।
তথ্যচিত্র নির্মাণের রসদ খুঁজতে সেই জমিদারবাড়িতে হাজিরও হয়েছিলেন সৌমিত্র। স্বভাবতই সেই জৌলুস আর নেই। বরং পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
ইতিহাস বলে, জমিদারের হাতে নিপীড়িত আধিবাসীরা সংগঠিত হয়ে একদিন জমিদার বাড়িটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। কুমির দুটির ভাগ্যে কী ঘটেছিল, সে কথা জানা যায়নি।
- সূত্র: এই সময়