পোকা থেকেই মিলবে মাংসের স্বাদ, বাঁচবে পরিবেশও
খাবারে মাংসের স্বাদ এনে দিতে পারে পোকামাকড়। খাদ্যাভাসে পোকার সংযোজন একদিকে যেমন প্রোটিনের বিকল্প উৎস হয়ে উঠতে পারে, তেমনি পরিবেশবান্ধব খাদ্যের যোগান দিতেও সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ইয়েলো মিলওয়ার্ম বিটলের লার্ভা চিনি দিয়ে রান্নার পর একদল গবেষক দেখেন যে খাবারটির স্বাদ মাংসের মতো। আর সেখান থেকেই ভবিষ্যতে লার্ভা মানুষের নিয়মিত খাদ্যাভাসের অংশ হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেন তারা।
এতদিন মিলওয়ার্ম সাধারণত পোষাপ্রাণীদের খাবার কিংবা মাছের টোপ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু স্বাদে মাংসের মতো হওয়ায় এখন তা মানুষের খাবারের মেন্যুতেও যোগ হতে পারে।
মাংস উৎপাদনকালে নিঃসৃত কার্বন ডাই অক্সাইডের ফলে প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্যতালিকায় মাংসের হার কমানোর ওপর জোর দিচ্ছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
দক্ষিণ কোরিয়ার ওংওয়াং ইউনিভার্সিটির গবেষক হি চো বলেন, 'উচ্চ ফ্যাটিএসিড, ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ও উচ্চমানের প্রোটিন সমৃদ্ধ পোকামাকড় মাংসের মতোই পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবারের উৎস হতে পারে'।
'অনেকেই ডায়েটে প্রাণীজ প্রোটিন খেতে পছন্দ করেন বা তাদের দেহে এধরনের প্রোটিনের চাহিদা থাকে। কিন্তু, প্রচলিত গবাদি পশু পালন ব্যবস্থায় প্রচুর গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসৃত হয়, যা গাড়ি থেকে নিঃসৃত কার্বনের চেয়েও বেশি। অন্যদিকে খুবই স্বল্প জমি, পানি ও সামান্য খাবারেই গবাদি পশু পালনের চেয়ে খুব সহজেই পোকা চাষ করা সম্ভব,' বলেন তিনি।
চো আরও বলেন, 'মিলওয়ার্ম ও ঝিঁঝিঁপোকার মতো খাওয়া যায় এমন পোকাগুলো সুপারফুড। এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার অনেক সমাজেই বহুকাল ধরে মানুষ এগুলো খেয়ে আসছে।
তবে ইউরোপ, আমেরিকাসহ আরও কিছু অঞ্চলের মানুষ পোকা খাওয়ার কথা শুনলেই নাক কুঁচকে ফেলেন। তবে এবার পোকা থেকে মাংসের স্বাদ মিললে এই সংকোচ অনেকটাই দূর হবে বলে মনে করেন গবেষকরা।
চলতি সপ্তাহে আমেরিকান ক্যামিকেল সোসাইটিতে গবেষণাটি উপস্থাপিত হবে।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান