টেনেসির ব্রাইটস চিড়িয়াখানায় জন্ম নিল বিশ্বের একমাত্র ডোরাকাটা দাগবিহীন জিরাফ
প্রাণীরাজ্যের অন্যতম বিরল একটি ঘটনা চোখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির ব্রাইটস চিড়িয়াখানায়। এ চিড়িয়াখানায় গত ৩১ জুলাই জন্ম নিয়েছে ডোরাকাটা দাগবিহীন, একরঙা একটি জিরাফ।
ব্রাইটস চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া এই মেয়ে জিরাফটিকে মনে করা হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র ডোরাকাটা দাগবিহীন জিরাফ। এটির গায়ের রঙ শুধুমাত্র বাদামি। জিরাফ মানেই সবার চোখে লম্বা গলাবিশিষ্ট, ডোরাকাটা যে প্রাণীটির ছবি ভেসে ওঠে, এই জিরাফের গায়ে সেরকম কোনো দাগের প্যাটার্ন দেখা যায়নি। ব্রাইটস জু জানিয়েছে, জিরাফটি ইতোমধ্যেই ৬ ফুট লম্বা এবং মা জিরাফ ও চিড়িয়াখানার কর্মীরা এটির যত্ন নিচ্ছেন।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ মনে করে, এমন বিরল বৈশিষ্ট্যের জিরাফ বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। কারণ ডোরাকাটা দাগ জিরাফের সবচেয়ে পরিচিত বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে একটি; জঙ্গলের মধ্যে ক্যামোফ্লেজের ক্ষেত্রে এটি তাদেরকে সাহায্য করে।
তাছাড়া, জিরাফের ডোরাকাটা দাগের নিচের ত্বকে রক্তনালীর একটি ব্যবস্থা রয়েছে যার মাধ্যমে জিরাফ প্রতিটি প্যাচের (দাগের) ঠিক কেন্দ্রস্থল দিয়ে তাপ নির্গত করতে পারে এবং এর মাধ্যমে জিরাফের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
টেনেসি চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া জিরাফটি ব্যতীত, প্রতিটি জিরাফের গায়ে ডোরাকাটা দাগের একটি স্বতন্ত্র প্যাটার্ন থাকে। গবেষকরা মনে করেন, জিরাফ বংশগত সূত্রে তার মায়ের কাছ থেকে এই প্যাটার্ন পেয়ে থাকে।
ব্রাইটস চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের প্রত্যাশা, এই বিরল জিরাফের জন্মের মাধ্যমে জিরাফেরা কি কি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় সে বিষয়গুলো উঠে আসবে।
আফ্রিকায় জিরাফের আবাসভূমি ছোট হয়ে আসা থেকে শুরু করে অবৈধভাবে শিকারের কবলে পড়ে আজ বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা প্রাণী প্রজাতিটির অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে।
ব্রাইটস চিড়িয়াখানার প্রতিষ্ঠাতা টনি ব্রাইট স্থানীয় টেলিভিশন নিউজ স্টেশন ডব্লিউসিওয়াইবি'কে বলেন, "আমাদের এখানে ডোরাকাটা দাগবিহীন জিরাফ শাবক জন্মের খবরটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অনেক প্রচার পাওয়ায় জিরাফ সংরক্ষণের ওপর আলোকপাত করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। খুবই নিঃশব্দে বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে এসব বন্যপ্রাণী, গত তিন দশকে বন্য জিরাফের সংখ্যা ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।"
এদিকে নতুন জন্ম নেওয়া ডোরাকাটা দাগবিহীন জিরাফের নামকরণ করার জন্য এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা নামগুলো হলো: কিপেকি, সোয়াহিলি ভাষায় যার অর্থ 'অদ্বিতীয়'; ফিরাইয়ালি, যার অর্থ 'অস্বাভাবিক'; শাকিরি- যার অর্থ 'সবচেয়ে সুন্দর' এবং জামেলা- যার অর্থ 'সবচেয়ে সুন্দরতমর মধ্যে একটি'।