মহাকাশে কি শারীরিক সম্পর্ক করা সম্ভব?
পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার পর মানুষ এখন কাজ করে যাচ্ছে গোটা মহাবিশ্বে নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তারের। তাই মহাকাশ সম্পর্কে জনসাধারণের মনে রয়েছে তুমুল আগ্রহ। মহাকাশে কী করা যায়, আর কী করা যায় না, জানবার দুর্বার আকর্ষণ। বিজ্ঞানীরাও বরাবরই চেষ্টা করে এসেছেন মানুষের সেসব কৌতূহল মেটানোর।
বিজ্ঞানমনস্করা এখন বেশ ভালোভাবেই জানেন, মহাকাশে গিয়ে পানি পান, খাবার খাওয়া বা গোসল করার মতো মানবজীবনের একদম মৌলিক কাজগুলো সম্পন্ন করাও ঠিক কতটা দুরূহ ব্যাপার।
কিন্তু যে প্রশ্নটির উত্তর এতদিন সাধারণ মানুষের জ্ঞানসীমার বাইরে ছিল, তা হলো : মহাকাশে গিয়ে কি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব? নইলে কীভাবে মহাকাশে বংশবৃদ্ধি করবে তারা!
অবশেষে এই প্রশ্নেরও উত্তর মিলেছে। ফ্রান্সের বিজ্ঞানী ও লেখক পিয়েরে কোহলার তার 'দ্য ফাইনাল মিশন : মির, দ্য হিউম্যান অ্যাডভেঞ্চার' বইয়ে আলোকপাত করেছেন মহাকাশে শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে।
কোহলারের দাবি, মহাকাশে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব কি না, সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহাকাশে যেহেতু মধ্যাকর্ষণ শক্তি শূন্য, সেজন্যই এ প্রসঙ্গটিকে ঘিরে এত জটিলতা। তাই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন এ ব্যাপারে বহুদিন ধরেই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি খোদ মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসাও নাকি গোপনে গোপনে এই পরীক্ষা করে চলেছে বহুদিন ধরে। তাদের সেই পরীক্ষার কোড নেম STS-XX।
কোহলার আরও জানিয়েছেন, এ পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা উচ্চতর প্রযুক্তির সাহায্যও নিচ্ছেন। তারা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেখতে চাইছেন, মধ্যাকর্ষণ শক্তি শূন্য স্থানে যদি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা যায়ও, তবে তা কোন কোন পজিশন বা ভঙ্গিতে।
অবশ্য কোহলারের এসব দাবি ইতোমধ্যেই কঠিন বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছে। নাসা তো বটেই, তার দাবি উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়ান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
এদিকে বায়োমেডিকাল প্রবলেমস ইনস্টিটিউটের ডেপুটি হেড ভালেরি বোগোমলভ জানিয়েছেন, মহাকাশে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা প্রায় অসম্ভব। বিশেষত পুরুষদের জন্য ঝামেলার মাত্রা খুবই বেশি, কেননা মধ্যাকর্ষণ শক্তি শূন্য থাকায় পুরুষদের পক্ষে কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার উপযোগী শারীরিক অবস্থায় পৌঁছানোই সম্ভব নয়!