কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে মূলধন সহায়তা, শুল্ক মওকুফের প্রস্তাব
প্রতিবেশি দেশ ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে পাকা আম খোসা ছাড়িয়ে স্লাইস করে টিনের কৌটা বা বিভিন্ন প্যাকেটে এবং নানাভাবে প্রক্রিয়াজাত করে তা সারা বছর বিক্রি হয়। অনলাইন মার্কেট প্লেস আলিবাবার এক পরিসংখ্যান বলছে, প্রক্রিয়াজাত এই আমের সবচেয়ে বড় তিন বাজার হচ্ছে ইস্টার্ন (৪০% বাজার), মিডল ইস্ট (বাজার ২০%) এবং উত্তর আমেরিকা (বাজার ১০%)। যেখানে ড্রাই ম্যাংগো, হিমায়িত ড্রাই ম্যাংগো, নরম-মিষ্টি ড্রাই ম্যাংগো এবং ম্যাংগো স্লাইসের এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
অথচ বাংলাদেশে ২০ লাখ টনের বেশি আমের উৎপাদন থাকা সত্ত্বেও এখনো কোন এগ্রো-প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রির অভাবে প্রক্রিয়াজাতকৃত আম বাজারজাত করতে পারছে না। শুধু উৎপাদনকালীন মাস তিনেক সময় মানুষ বাজার থেকে সরাসরি আম কেনার সুযোগ পায়। অথচ ভরা মৌসুমে উৎপাদনকারীরা আম বিক্রি করে খুব একটা দাম পায় না।
দেশে-বিদেশে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের জুস তৈরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ। একই অবস্থা কাঁঠালের ক্ষেত্রেও। এ বছর প্রায় ১৯ লাখ মে. টন কাঁঠালের উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু সরাসরি কাঁঠালের পাল্প (রস) প্রক্রিয়াজাত করে বা অন্য কোন পণ্য তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে দেখা যায় না। বরং বেশি ফলনে কখনো কখনো এই কাঁঠাল রাস্তায় ফেলে দিতে দেখা যায়।
কৃষি খাতের পণ্যগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে দেশি-বিদেশি মার্কেটে সরবরাহ করতে সরকার এ খাতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে।
কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য নতুন ও পুরাতন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন ধাপের উন্নয়নে নামমাত্র সুদে মূলধন সহায়তা, ঋণের সুদ সহায়তা, ক্যাপিটাল মেশিনারীজ আমদানিতে শুল্ক অব্যাহতি, গবেষণায় প্রণোদনা, পরীক্ষাগার তৈরিতে অনুদান, আয়কর মওকুফ, দক্ষ কর্মী তৈরিসহ বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করতে যাচ্ছে সরকার।
এ লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প নীতিমালা-২০২১।
খসড়া এ নীতিমালায় আগামী পাঁচ বছরে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। যার মাধ্যমে ১ লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নীতিমালার একটি খসড়া ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কাছে মতামতের জন্য পাঠিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।এরপর এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদের সভায় উত্থাপন করা হবে।
এই নীতিমালায় গ্রেডিং এবং প্যাকিংসহ ফল-মূল-সবজি, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, মাছ, হাঁস-মুরগি, ডিম, মাংস ও মাংসজাতপণ্য, ফুল, শস্যদানা প্রক্রিয়াকরণে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রুটি, তেলবীজ, নাস্তা, বিস্কুট , স্ন্যাকস, কোকোসহ কনফেকশনারী প্রক্রিয়াকরণ ছাড়াও নারকেল তেল পরিশোধন, যবের মন্ড, প্রোটিনজাত খাদ্য, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার, মায়ের দুধের বিকল্প খাবারও স্থান পেয়েছে নীতিমালায়।
বিজ্ঞানসম্মতভাবে স্থাপিত টিস্যু কোষ ল্যাবরেটরি, শিল্পমান পূরণের লক্ষ্যে আধুনিক গ্রীন হাউজ, বীজ উৎপাদন ইউনিট স্থাপনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে গুণগতমান রক্ষার পাশাপাশি হালাল ব্র্যান্ডিংয়ের কৌশল অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।
মূলধন সহায়তা
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগ করবে তাদের প্রকল্প ব্যয়ের (প্ল্যান্ট স্থাপন, যন্ত্রপাতি কেনা ও অন্যান্য কাজ) ৫০% বা সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা নমনীয় ঋণ/ নামমাত্র সুদে ঋণ আকারে মূলধন সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে নীতিমালায়।
তবে এই ঋণসুবিধা পাওয়ার জন্য এসএমই শিল্প ইউনিটকে মূলধন সহায়তার অনুমোদন পাওয়ার ১২ মাসের মাথায় এবং বৃহৎ শিল্প ইউনিটকে চব্বিশ মাসের মধ্যে উৎপাদনে যেতে হবে।
এ শিল্পের প্রথমিক প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র (পিপিসি) এবং প্রাথমিক সরবরাহ কেন্দ্র (পিসিসি) স্থাপনের ক্ষেত্রেও একই সুবিধা পাওয়া যাবে।
তবে বিদ্যমান খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ইউনিটের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নে কেউ যদি বিনিয়োগ করতে চায় তবে প্রকল্প ব্যয়ের ২৫% বা সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা ঋণ আকারে মূলধন সহায়তা দেয়া হবে। কৃষি, হর্টিকালচার, দুগ্ধজাত, মাংস জাতীয় পণ্যের কোল্ড চেইন স্থাপনের জন্যও সরকার এ সুবিধা দেবে।
সুদ সহায়তা
এ শিল্পের বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও চমক রয়েছে। শিল্প ইউনিট এবং কোল্ড চেইন অবকাঠামোর জন্য যদি স্থায়ী মূলধন বিনিয়োগের শর্তে ঋণ গ্রহণ করা হয় তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ৫ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত সুদ সহায়তার প্রস্তাব করা হয়েছে। কারখানা চালু হওয়ার ৭ বছর পর্যন্ত এ সুবিধা বিদ্যমান থাকবে। তবে পিপিসি এবং পিসিসি এর ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা সুদ সহায়তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
সরকার রপ্তানি, পরিবহন ক্রয়, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ছাড়, গবেষণায় নগদ অর্থ প্রদান, বিদেশে মেলায় অংশগ্রহণে স্টল বরাদ্দে নগদ সহায়তা প্রদান করবে।
শুল্ক মওকুফ
নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, শিল্প ইউনিটের জন্য আমদানি করা মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক মওকুফ করা হবে। প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ইউনিটের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন ক্রয়ের মূল্য বাবদ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কমানো হবে। তবে এই ছাড়ের পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা। এছাড়া বাণিজ্যিক উৎপাদনের তারিখ থেকে শিল্প ইউনিটকে পচনশীল পণ্য রপ্তানির জন্য সর্বোচ্চ হারে নগদ প্রণোদনা দিবে। একেকটি ইউনিটের জন্য প্রতি বছর এই প্রণোদনার সর্বোচ্চ সীমা হবে ৫০ লাখ।
একই সঙ্গে দুই বছরের জন্য সরকার কর্পোরেট আয়কর মওকুফ করবে।
এ খাতের বাজার উন্নয়নের জন্য সরকার গবেষণার উপর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি সরকার অনুমোদিত কোন গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্বারা গবেষণা পরিচালনা করে তবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা বা মোট ব্যয়ের ৫০ শতাংশ টাকা গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হবে।
এছাড়া পরীক্ষাগারে উন্নয়নে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা বা প্রকল্প ব্যয়ের অনধিক ৫০ শতাংশ প্রদান করা হবে বলেও খসড়া নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অবকাঠামো উন্নয়ন
আগামী ৫ বছরের মধ্যে সমুদ্র বন্দর, বাজার এবং বিমানবন্দরের কাছাকাছি কৃষি-খাদ্য প্রযুক্তি পার্ক বা কৃষি রপ্তানি অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। দ্রুত শিল্পায়নের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলও প্রতিষ্ঠা করবে।
উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত বিষয় হিসেবে 'খাদ্য প্রকৌশল ব্যবস্থাপনা' চালু করবে। উন্নত দেশের ইন্সটিটিউশন, জাতীসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা এর সহযোগিতায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রযুক্তি ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠান করা হবে। যেখানে শিল্প সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পড়ানো হবে এবং টেকনিক্যাল জনশক্তি তৈরি করা হবে। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) অধীনে সরকার এগ্রো ফুড আইএসসি (এএফআইএসসি) প্রতিষ্ঠা করেছে। ভোকেশনাল ট্রেনিং কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সরকার থেকে এএফআইএসসিকে ফান্ড দিবে। এছাড়া হালাল পণ্যের সার্টিফিকেশন ও অন্যান্য পণ্যের মূল্যায়নের জন্য দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সার্টিফিকেশনের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে।
এছাড়া খাদ্য মোড়কীকরণ, পরীক্ষার মান উন্নয়ন, সাপ্লাই চেইনের ডেভেলপমেন্ট এর মাধ্যমে সেক্টরের উন্নয়ন করতে চায় সরকার। যাতে করে দেশে মানসম্পন্ন পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি বৃদ্ধি সম্ভব হয়। পণ্যের মানোন্নয়নে বিএসটিআই, বিসিএসআইআর, বাংলাদেশ এক্রিডিটেশেন বোর্ড (বিএবি), ইসলামিক ফাউন্ডেশন পণ্যের নতুনত্ব তৈরি ও মান উন্নয়নে কাজ করবে। এছাড়া সরকার দ্রুত একটি কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ বোর্ড প্রতিষ্ঠা করবে। এ খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা এবং কৃষকদের সাথে বড় ধরনের বাজার সংযোগ তৈরি করতে ঢাকায় অবস্থিত সকল উপ খাত এসোসিয়েশনের সদস্যদের নিয়ে সরকার এই বোর্ড প্রতিষ্ঠা করবে।
জাতীয় পর্যায়ে নীতিমালাটি বাস্তবায়ন তদারকি ও মূল্যায়ন পর্যালোচনা করার উদ্দেশ্যে একটি কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প উন্নয়ন কাউন্সিল গঠন করা হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সভাপতিত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট এই কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যারা নিয়মিত নীতিমালার বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখভাল করবে। এছাড়া সরাসরি বাস্তবায়নে থাকবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বাধীন ১৯ সদস্যের একটি কমিটি।
কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে সরাসরি প্রায় আড়াই লাখ মানুষ কাজ করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ যেমন কৃষি পণ্য উৎপাদনে জড়িত কৃষক, প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল তৈরির কারখানার কর্মচারী, সাপ্লায়ার সহ বিভিন্ন অংশে আরও বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজ করছে। তবে এর সঠিক পরিসখ্যান বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস এ্যাসােসিয়েশন (বাপা) বা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কাছে কাছে নেই।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এগ্রো প্রসেসিং পণ্যের বাজার ৫০ হাজার কোটি টাকার কম হবে না।
তবে প্রসেসিং খাতের সংগঠন বাপার কাছে এ বিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যান নেই বলে জানা গেছে।
বাপার তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০২০-২১ এ এর পরিমাণ ৪৫০ কোটি টাকা ছাড়াবে। বর্তমানে ১৪৪ দেশে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
দেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩.৬ শতাংশ। দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪০.৬২ শতাংশ কর্মসংস্থান আসে কৃষি খাত থেকে। এ খাতের একটি বড় অংশ কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প। এ শিল্পটি বাংলাদেশের উৎপাদন খাতে ৮ শতাংশ অবদান রাখছে।
২০১৭ সালে প্রকাশিত বাপার এক তথ্য বলছে, জিডিপিতে কৃষি প্রক্রিয়াজকরণ শিল্পের অবদান ১% এর বেশি।
নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে বাপার ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ শোয়েব হাসান বলেন, 'নীতিমালায় যেসব প্রণোদনার কথা বলা হয়েছে তা দিলে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব। তবে শঙ্কা এর বাস্তবায়ন নিয়ে। অনেকগুলো সংস্থা এই বিষয়টি ফোকাস করে কাজ করবে, সেক্ষেত্রে যদি সমন্বয়নটা ঠিকঠাকভাবে না হয় তবে এর থেকে কাঙ্খিত ফল আসবে না।'
কোভিড পরিস্থিতির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, 'কোভিডের মধ্যে বড় শিল্পকারখানা প্রণোদনা পেয়েছে। ব্যাংকের ঋণও পেয়েছে। কিন্তু এসএমইতে যারা আছে তারা প্রণোদনার টাকা পায়নি। তারা কিন্তু ধুঁকছে। এই এমএমইদের না বাঁচানো গেলে এদের মধ্যে থেকে কেউ বড় প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হতে পারবে না।'
কৃষি পণ্য উৎপাদনে জোনিং সিস্টেম, কারখানা তৈরির জন্য ইকোনমিক জোন তৈরি, সহজ শর্তে ঋণ, কারখানার সাইজ অনুযায়ী পণ্য তৈরির ক্লাষ্টার গঠন, কাঁচামালের ইমপোর্ট ডিউটি বাতিল, লাইসেন্সের শর্ত শিথিল, কারখানার স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করার মত বিষয়গুলোতে কাজ করতে হবে বলেও জানান এগ্রো-প্রসেসিং খাতের এই ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য প্রযুক্তি ও পল্লী শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, 'বাংলাদেশে পর্যাপ্ত কৃষি পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। প্রতি মৌসুমে যে পরিমাণ ফল-সবজি উৎপাদিত হয় তার ৪০% সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। এসব কৃষি পণ্য যদি প্রক্রিয়াজাত করা যায় তবে সারা বছরই সরবরাহ করা যাবে। আবার এসব কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন করে বিদেশের বাজারে রপ্তানির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান এটি করছে। যেমন প্রাণ গ্রুপ ১৪৪ দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি করছে। এ শিল্পের আরও সম্প্রসারণে আমাদের বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও দক্ষ লোকবল লাগবে'।
তিনি আরও বলেন, 'তৈরি পোশাক শিল্পের মতো খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পেরও ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা জরুরি'।