কেরু এ্যান্ড কোম্পানিতে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার চিনি অবিক্রিত
বৃহত্তর চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গার কেরু এ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। চিনি উৎপাদনে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর লোকসানের মুখে পড়ে। এখনও পর্যন্ত চিনি অবিক্রিত রয়েছে ৪৮৪১ মেট্রিক টন। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে অবিক্রিত চিনির মূল্য ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার মত। এর বিপণন ব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় প্রতি বছরই চিনি অবিক্রিত থেকে যায়।
১৯৩৮ সালে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু এ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড গড়ে উঠে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন মিলটি পরিচালনা করছেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সমস্যা আর সম্ভাবনা উভয়ের মধ্য দিয়েই মিলের কার্যক্রম চলছে।
২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি কেরু এ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডে আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়। কোন রকম যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়াই ২০২১ সালের ২১ মার্চ মৌসুমের মাড়াই কার্যক্রম শেষ হয়। আখ মাড়াই করা হয় এবার ১ লাখ ১১ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন। আখ মাড়াই করার পর মিল থেকে চিনি উৎপাদন হয়েছে ৫৮৮৩ মেট্রিক টন। সরকারী সিদ্ধান্তে কুষ্টিয়া জগতি চিনি মিলটি বন্ধ রয়েছে। কুষ্টিয়া জেলায় উৎপাদিত আখ কেরু এ্যান্ড কোম্পানির মিলে মাড়াই করা হয়। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৯ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করবে।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মিলটিতে চিনি অবিক্রিত ছিল ৪৬৮২ মেট্রিক টন। দুই অর্থবছর মিলে কেরু এ্যান্ড কোম্পানিতে চিনির মজুদ দাঁড়ায় ১০ হাজার ৫৬৫ মেট্রিক টনের একটু বেশি। ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত মিলটি চিনি বিক্রি করে ডিলারদের মাধ্যমে ৫ হাজার ৭২৪ মেট্রিক টন।
কেরু এ্যান্ড কোম্পানির নিজস্ব খামারে ১ হাজার ৫৫০ একর জমিতে আখের চাষ করা হয়। এখান থেকে ২৪ হাজার মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। স্থানীয় কৃষকরা ৬ হাজার ৯৮২ একর জমিতে আখ চাষ করেন। আখ উৎপাদন হয় প্রায় ৯৪ হাজার মেট্রিক টন। কেরু এ্যান্ড কোম্পানির মিল গেট থেকে কর্তৃপক্ষ প্রতি মণ আখ কৃষকদের কাছ থেকে কেনে ১৪০ টাকায়। আর কেরু এ্যান্ড কোম্পানির সেন্টারে কৃষকরা আখ বিক্রি করেন ১৩৬ টাকা প্রতি মণ।
৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার চিনি মজুদ রয়েছে মিলের গোডাউনে। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৬৩ টাকা কেজি দরে।
দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক কৃষি ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: গিয়াস উদ্দিন বলেন, 'কেরু এ্যান্ড কোম্পানির উৎপাদিত চিনির মান যে কোন বছরের তুলনায় ভাল। এ বছর মিলটি সুন্দরভাবে চলেছে। চিনি অবিক্রিত রয়েছে। শুধুমাত্র বাজারজাতকরনের কারণে এখানকার চিনি অবিক্রিত থেকে যায়। অন্য কোম্পানির মার্কেটিং ভাল বলে আমরা পিছিয়ে পরি। কোম্পানি ডিলার নির্ভরতায় চিনি বিক্রি হয়। ডিলাররা চিনি না কিনলে বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সকল সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। চিনির চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে'।