জুলাইয়ে ২৮ শতাংশ কমেছে রেমিট্যান্স আয়
চলতি বছরের জুলাইয়ে দেশে আসা প্রবাসী আয় প্রবাহ গত বছরের একই মাসের তুলনায় ২৮ শতাংশ কমে ১৮৭ কোটি ডলার হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুসারে একথা জানা যায়।
এনিয়ে নীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর জানান, আমাদের দেশে প্রবাসী আয়ের বাস্তব চিত্রের সঙ্গে যে সংজ্ঞা দেওয়া হয় তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়েছে।
তিনি বলেন, "গত বছর মহামারির মধ্যেও প্রবাসীদের অনেকের কাছ থেকে বড় বিনিয়োগ এসেছে, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ কালো টাকাও তখন ফেরত আসে। তাই এসব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের বাংলাদেশমুখী প্রবাহ ভালো অবস্থানেই ছিল।"
"তবে আমাদের প্রবাসী কর্মীদের আয় যে আশঙ্কাজনক ভাবে কমেছে এখন সেকথা বলার সময় হয়েছে। কাজ হারিয়ে ইতোমধ্যে এদের অনেকে দেশে ফিরে এসেছেন, তাই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক," যোগ করেন তিনি।
এদিকে দেশে আসা প্রবাসী আয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের মাধ্যমে। গত জুলাইয়ে ব্যাংকটিতে ৫৫০. ৩০ মিলিয়ন বা ৫৫ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় আসে।
অগ্রণী ব্যাংক ১৯৪.৮০ মিলিয়ন ডলার, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ২২৯.১১ মিলিয়ন এবং সোনালী ব্যাংক গত মাসে ১১৭.৪৯ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে।
গতবছর করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও সর্বকালের সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্সের মুখ দেখে বাংলাদেশ।
২০২২ অর্থবছরের মুদ্রানীতির বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয় বৈধ চ্যানেলে পাঠানোয় সরকারের দেওয়া ২ শতাংশ প্রণোদনার কারণে অবৈধ চ্যানেলে কম অর্থ আসে। অন্যদিকে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে মুদ্রা প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া, যথাযথ সময়ে এবং কম-খরচে মুদ্রা লেনদেন নিশ্চিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
জুলাইয়ের প্রবাসী আয় যুক্ত হয়ে ওই মাসের ২৮ তারিখ নাগাদ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫.৭৮ বিলিয়ন ডলার হয়।
মূলত, আমদানি বাড়ার কারণেই আগের মাসের তুলনায় জুলাইয়ে রিজার্ভ ১.৩১ শতাংশ কমেছে।
গেল বছরের ৮ অক্টোবর প্রথমবারের মতো দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ৪ হাজার কোটি ডলারের ঘর ছাড়িয়ে যায়।