ডেবেনহামসের আউটলেট বন্ধের ঘোষণায় দুশ্চিন্তায় সরবরাহকারীরা
ব্রিটিশ রিটেইলার কোম্পানি ডেবেনহামস ডেনমার্কে একটি বাদে বাকি সবগুলো আউটলেট বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছ। এরফলে বাংলাদেশী সরবরাহকারীদের রপ্তানিকৃত পণ্যের ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর বাংলাদেশি উৎপাদনকারীদের থেকে ১১ কোটি ডলারের বেশি গার্মেন্টস পণ্য ক্রয় করে। গত ১৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটি ৬৯ জন স্থানীয় কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই বাংলাদেশের যোগাযোগ অফিস বন্ধ করে দেয়।
গত মঙ্গলবার ডেবেনহামসের ঘোষণার পর তাদের বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটি তাদের বর্তমান মজুদকৃত পণ্য বিক্রির জন্য যুক্তরাজ্যের ১২৪টি আউটলেট খোলা রাখবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডেবেনহামসের একজন শীর্ষ সরবরাহকারী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, "গত জানুয়ারীতে ৩৫ জন বাংলাদেশি সরবরাহকারী ডেবেনহামসের কাছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার ডলারের পণ্য বিক্রি করে, মার্চ- এপ্রিলের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির পাওনা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে আমরা এখনো পাওনা বুঝে পাইনি। প্রতিষ্ঠানটির আউলেটগুলো বন্ধের ঘোষণায় ব্যাপারটি আরও অনিশ্চিয়তার মুখে পড়লো।"
তিনি আরও বলেন, "মহামারির সময় যুক্তরাজ্যের বন্দরে আমাদের ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য আটকা পড়ে। গত জুনে ডেবেনহামস ২৫ শতাংশ ছাড়ে ৩৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার পরিশোধ করে বন্দর থেকে চালান ছাড়িয়ে নেয়।"
ডেবেনহামসের শীর্ষ এই বাংলাদেশি রপ্তানিকারক আরও জানান, "মহামারির সময় প্রতিষ্ঠানটি ৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার মূল্যের অর্ডার বাতিল করে। তবে নভেম্বরের শেষে ৯০ লাখ ডলারে পণ্যের চালান ছেড়ে মূল্য পরিশোধ করে।" এখনো ৩ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের বকেয়া পরিশোধ করা বাকি বলেও জানান তিনি।
ডেবেনহামসের ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ আশা ছিল আরেক ব্রিটিশ রিটেইলার কোম্পানি আরকেডিয়ার বিনিয়োগ, তবে নভেম্বরে এ প্রতিষ্ঠানটিও লোকসানের মুখে পড়ায় ডেবেনহামসের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত জেডি স্পোর্টসও সরে দাঁড়ানোয় ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার ডেবেনহামস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বর্তমান বাণিজ্যের প্রতিকূল অবস্থার কারণে আমাদের কার্যক্রম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।' অবস্থার উন্নতি না হলে পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের ১২৪টি আউটলেটের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়।
ডেবেনহামস হংকং লি./বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি ম্যানেজার আখতার উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, "বাংলাদেশের ৬৯ জন কর্মচারীর বেতন পরিশোধ না করেই ডেবেনহামস গত ১৫ এপ্রিল অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এবং ক্ষতিপূরণ না দিয়েই এ কাজ করা হয়।"
ডেবেনহামসের হংকং অফিসে অফিস বন্ধ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি আইন অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার অনুরোধ জানিয়ে মেইল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।