বিপুল ক্রেতার চাপে ক্র্যাশ করেছে ডেবেনহামসের ওয়েবসাইট
খুচরাপণ্য বিক্রেতা ব্রিটিশ ব্র্যান্ড ডেবেনহামস একটি বাদে তাদের সকল আউটলেট বন্ধ করে দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় দেশের তৈরি পোশাক উৎপাদকেরা। উদ্বেগ বেড়েছে বকেয়া অর্থ প্রাপ্তি নিয়েও। তবে এই ঘোষণার পর অবশ্য যুক্তরাজ্যে দেখা গেছে ভিন্ন পরিস্থিতি।
সেখানে ব্র্যান্ডটির ভোক্তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে বন্ধ হওয়ার আগেই আকর্ষণীয় মূল্যছাড়ে দেওয়া পোশাক কেনার। ক্রেতাদের এই বাড়তি চাপে যুক্তরাজ্য সময় আজ বুধবার (২ ডিসেম্বর) সকালেই ক্র্যাশ করেছে তাদের ওয়েবসাইট।
রিটেইল চেইনটি মহামারির মধ্যে ব্যবসায় ঘাটতির মধ্যে পড়ে। উত্তরণের চেষ্টায় জেডি স্পোর্টসের সঙ্গে তাদের একটি বাণিজ্যিক চুক্তি হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু সেই আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনই দেওলিয়াত্ব ঘোষণা করবে।
ফলে শেষ হচ্ছে যুক্তরাজ্যে তাদের ২৪২ বছরের ব্যবসার ঐতিহ্য আর চাকরি হারাতে চলেছেন ১২ হাজার কর্মী।
তার আগেই বুধবার বর্তমান মজুদকৃত পণ্য বিক্রির জন্য যুক্তরাজ্যের ১২৪টি আউটলেট খোলা রাখা হয়। বিপুল ছাড়ে বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয় পোশাকসহ, হ্যান্ডব্যাগ, জুতা, ঘড়ি ও অন্যান্য ফ্যাশন সামগ্রী। কিছু কিছু পণ্যে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় দফা জাতীয় লকডাউন সমাপ্তির একদিন পরদিন বুধবার অবশ্য ক্রেতাদের শারীরিক উপস্থিতি ছিল খুবই কম। অক্সফোর্ড স্ট্রিটে অবস্থিত তাদের সবচেয়ে বিখ্যাত আউটলেটে এসেছিলেন মাত্র ৪০ জন ক্রেতা। বাকিরা অনলাইনেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন আকর্ষণীয় ছাড়ের সুযোগ নিতে। সেখানে ভার্চুয়াল সারিতে কেনাকাটার জন্য অপেক্ষা করেছেন কয়েক লাখ ব্যক্তি।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকেই ছাড়ের ঘোষণা জানাজানি হওয়ার পর থেকে অনলাইনে ভিড় বাড়তে থাকে। সেখানে কাউকে কাউকে ৩০ মিনিট অপেক্ষাও করতে হয়েছে। এক পর্যায়ে একসঙ্গে ৩ লাখ মানুষ ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করেন। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত দশ লাখ মানুষ ডেবেনহামসের পণ্য কিনেছেন।
এভাবে ভিড় বাড়তে থাকায় আজ সকালে ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ 'বিকল' হয়ে পড়ে। এসময় সাইটের ঠিকানায় ক্রেতাদের উদ্দেশ্য লেখা ছিল; ''আমরা দুঃখিত। এই মুহূর্তে সাইটটি সচল নয়। আমরা বিপুল পরিমাণ ক্রেতার ভিড় লক্ষ্য করেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই খুব শীঘ্রই আমরা আপনাদের সেবায় ফিরে আসব।''
যুক্তরাজ্যে ডেবেনহামস সুদিন দেখলেও তাদের বাংলাদেশী সরবরাহকারীদের কিন্তু ঘুম উড়ে গেছে। ব্র্যান্ডটির কাছে তাদের বকেয়া ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা পরিশোধের ব্যাপারে দেখা দিয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা।
প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর বাংলাদেশি উৎপাদনকারীদের থেকে ১১ কোটি ডলারের বেশি গার্মেন্টস পণ্য ক্রয় করে। গত ১৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটি ৬৯ জন স্থানীয় কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই বাংলাদেশের যোগাযোগ অফিস বন্ধ করে দেয়।