৯৮ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য নিয়ে সন্দেহ অর্থমন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, "তারা এই তথ্য কোথায় পেয়েছে? আমি বলে দিলাম বছরে আমেরিকা থেকে ৩০ হাজার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়। তাহলেই হয়ে গেল? আইডিয়া দিয়ে অনেক কিছু করা যায়।"
২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে এক হাজার ১৫১ কোটি ডলার; এমন তথ্য প্রকাশ করেছে জিএফআই। তবে অর্থ পাচার সংক্রান্ত এ প্রতিবেদন সম্পর্কে সরকার কিছু জানে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ।
বুধবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, "অর্থ পাচার সংক্রান্ত জিএফআই এ প্রতিবেদন সম্পর্কে সরকার কিছু জানে না। তবে যারা এ অপরাধে জড়িত (যারা অর্থ পাচারের সাথে জড়িত) তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।"
তিনি বলেন, "তাদের(জিএফআই) কাজই হলো এই সমস্ত তথ্য বের করা, তথ্য বিশ্লেষণ করা। ওদের(জিএফআই) যদি কোন বক্তব্য থাকে তাহলে তো আমাকে জানাবে! পত্রিকায় এই সমস্ত তথ্য দিয়ে কি লাভ।"
অর্থমন্ত্রী বলেন, "তারা (জিএফআই) আমাকে দেখতে পারে না। সরকার দেখতে পারে না? আইডিয়া থেকে অনেক কিছু বলা যায়। তারা আইডিয়ার উপরে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।"
অর্থ পাচার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, "যেহেতু এই বিষয়ে জানিনা এই বিষয়ে কথা বলবো না। বিষয়টা আমরা দেখবো ও বিশ্লেষণ করবো। এ সংক্রান্ত তথ্য আমার কাছেও নেই।"
সরকারের করণীয় কি জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, "সরকার তো এই বিষয়ে জানেই না। সরকারকে তো আগে জানতে হবে। বাংলাদেশে তথ্য আসেনি। তথ্য আসলে তো আমি জানতাম। আমি সরকারের একটা অংশ। সরকারের কাছে তথ্য এল আমি পেতাম। যদি এখান থেকে টাকা চলে যায় তাহলে তো অর্থমন্ত্রণালয়ের টাকাই যাবে।"
টাকা পাচারে কোন পদক্ষেপ নেবেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, "এই বিষয়ে মামলা ছাড়া কি করতে পারি। কারোর কিছু অপরাধ আসলে মামলা করি। মামলে করলে দুদক থেকে শুরু করে সরকারের অন্যান্য তদন্ত সংস্থা ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। কাউকে জেলে পাঠায়, কেউ আবার মুক্তি পায়।"
ব্যবসায়ীরা কানাডায় বাড়ি করছে এই বিষয়ে তিনি বলেন, "আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারা অর্থমন্ত্রী হলে কি করতেন? আমরাও পদক্ষেপ নিচ্ছি। অনেক মামলা করি অনেকে জেলে আছে। তবে সর্বশেষ বিষয়টা কোর্ট দেখেন।"
মঙ্গলবার প্রকাশিত জিএফআই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে এক হাজার ১৫১ কোটি ডলার। দেশীয় মুদ্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। পাচারের এ পরিমাণ ২০১৪ সালের চেয়ে বেড়েছে। এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে চারটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।
জিএফআই'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই প্রক্রিয়ায় এই অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং)।