৪ সেপ্টেম্বর থেকে আরটিজিএস’র মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন
আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের অভ্যন্তরে ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন করবে রিয়েল-টাইম গ্রস সেটেলমেন্টের (আরটিজিএস) মাধ্যমে। ফলে সহজেই করা যাবে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ও কমে আসবে লেনদেনের খরচ।
রোববার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
বর্তমানে ম্যানুয়াল পদ্ধিতে বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্টের কাজ সম্পন্ন হয়। এতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের স্বশারীরে উপস্থিত থেকে সম্পন্ন করতে হয় এ প্রক্রিয়া। ফলে লেনদেনের খরচ যেমন বাড়ে, তেমনি সময়ও বেশি প্রয়োজন হয়, বাড়ে জটিলতাও।
ব্যাংকগুলোর এ ধরনের লেনদেনের জন্য একজন কর্মীর মাধ্যমে ফরেন ডিমান্ড ড্রাফট (এফডিডি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রেখে আসতে হয়। ফরেন ডিমান্ড ড্রাফট (এফডিডি) হলো, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চ্যানেল ব্যবহার করে আন্তঃব্যাংক তহবিল স্থানান্তরের সুবিধার্থে ব্যাংকগুলোর ব্যবহৃত একটি চ্যানেল, যা নিষ্পত্তির জন্য এক কার্যদিবস সময়ের প্রয়োজন হয়।
যদিও রিয়েল-টাইম গ্রস সেটেলমেন্টের (আরটিজিএস) মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে স্থানীয় মুদ্রা (টাকায়) লেনদেনের করা হয়, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে আরটিজিএসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায়ও যেকোনো পরিমাণে লেনদেন করা যাবে। প্রতিটি লেনদেনে গ্রাহক থেকে ব্যাংকগুলো ভ্যাটসহ সর্বোচ্চ ১০০ টাকা বা সমমানের ডলার ও ইউরো নিতে পারবে।
আরটিজিএস পদ্ধতিতে স্থানীয় এবং বৈদেশিক উভয় মুদ্রাতেই লেনদেন সম্ভব। তাই এখন বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচটি বৈদেশিক মুদ্রায় (ইউএস ডলার, গ্রেট ব্রিটেন পাউন্ড, ইউরো, কানাডিয়ান ডলার, জাপানিজ ইয়েন) ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্ট চালু করতে যাচ্ছে। এছাড়া, ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়ায় শীঘ্রই অন্তর্ভুক্ত হবে চাইনিজ ইউয়ান।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, এ সেবা চালুর মাধ্যমে দেশীয় মুদ্রার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রায়ও দ্রুত সময়ে লেনদেন নিষ্পত্তি করতে পারবে ব্যাংকগুলো।
"ব্যাংকগুলোর আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত লেনদেন নিষ্পত্তি কার্যক্রম আরও সহজ হবে। দ্রুত সময়ে লেনদেন নিষ্পত্তির ফলে ব্যবসা, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও বেগবান হবে", যোগ করেন তিনি।
বর্তমানে দেশের ব্যাংকগুলোর ১১ হাজারের বেশি শাখা দেশীয় মুদ্রায় আরটিজিএস পদ্ধতিতে লেনদেন সম্পন্ন করে।
তবে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের ক্ষেত্রে কেবল এডি ব্রাঞ্চ ও হেড অফিস ক্লিয়ারিং ইউনিট ইস্যু করতে পারবে। অন্য কোনো শাখা থেকে এ লেনদেন করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুনে গ্রাহকরা দেশীয় মুদ্রায় আরটিজিএস পদ্ধতিতে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭৮২ কোটি টাকার লেনদেনে নিষ্পত্তি করেছে, যা আগের মাস মের তুলনায় ২৯ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি।
মে মাসে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও আরটিজিএসের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো দেশীয় মুদ্রায় লেনদেন পরিচালনা করছে।