শেষ হলো ৩ দিনব্যাপী এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার, ভ্রমণ পিপাসুদের ব্যাপক সাড়া
দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসুদের অংশগ্রহণে শনিবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার (এটিএফ)।
দুই বছর পর পর এমন আয়োজন সাড়া জাগিয়েছিল ভ্রমণ পিয়াসীদের মধ্যে। আয়োজকদের মতে, পর্যটক ও দর্শনার্থীদের অংশগ্রহণে ইভেন্টের শেষ দিনটি উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। এক ছাদের নিচে হোটেল সুবিধা, ভিসা প্রক্রিয়াসহ ভ্রমণ সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য পেয়ে খুশি হয়েছেন ভ্রমণপ্রেমীরা।
ঢাকায় এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের (এটিএফ) চেয়ারম্যান ও সিইও মহিউদ্দিন হেলাল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "৩ দিনের মেলায় প্রায় ১০ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এসেছে। আমরা আগামী বছর আরও বড় পরিসরে মেলা করবো, যেখানে ৩০ টিরও বেশি দেশ অংশ নেবে বলে আশা করছি।"
তিনি বলেন, "সরকারকে পর্যটন পণ্য তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে। এ পণ্য তৈরি হলে এ মেলার মাধ্যমে সেগুলো আমরা প্রমোট করবো; বিদেশিদের কাছে তুলে ধরবো। এতে দেশে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে।"
মেলায় ধানমন্ডি থেকে সামসুন্নাহার মিম পরিবার নিয়ে এসেছেন। টিবিএসকে তিনি বলেন, "আমার ছেলে নেপাল ঘুরতে যেতে চায়। ও হিমালয় দেখতে চায়। তাই তথ্য জানতে মেলায় এসেছি।"
"এক ছাদের নিচে সব তথ্য পাওয়ায় খুবই ভালো হয়েছে। এখানে ভ্রমণের ওয়ানস্টপ সার্ভিস পাওয়া যাচ্ছে। টাকা দিলেই ভ্রমণের সব কিছু করে দেবে তারা," যোগ করেন তিনি।
আরেক দর্শনার্থী জাহিদ আনোয়ার বলেন, "স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছি। সুন্দরবন যাওয়ার একটি প্যাকেজ পছন্দ হয়েছে, তথ্য নিয়ে রেখেছি। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।"
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী টিবিএসকে বলেন, "এই মেলার মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান হচ্ছে। ঢাকা ও কাঠমান্ডু রেগুলার ফ্লাইট রয়েছে। এরপরও দুই দেশের সঙ্গে আরও যোগাযোগ উন্নয়নের প্রয়োজন।"
"বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, ভারতকে নিয়ে সড়ক পথের যোগাযোগ উন্নয়ন হলে এ অঞ্চলে আরও পর্যটক বাড়বে। একে অন্যর সহোযোগিতায় এ খাতকে এগিয়ে নিতে চাই," যোগ করেন রাষ্ট্রদূত।
নেপাল থেকে মেলায় এসেছে হিমালায়া হাব অ্যাডভেঞ্চার প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকাশ লামিছনে টিবিএসকে বলেন, "এই মেলায় অংশ নিয়ে আমি বাংলাদেশের পর্যটন স্পট সম্পর্কে জানতে পেরেছি।"
তিনি বলেন, "আমাদের দেশে সমুদ্র সৈকত নেই। বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতে যেনো পর্যটকরা আসে সেজন্য আমি নেপালে প্রচারণা চালাবো। আমরা চাই বাংলাদেশের লোক আরও বেশি নেপালে ঘুরতে যাক, আর নেপালের লোক সমুদ্র সৈকত দেখতে বাংলাদেশে আসুক।"
মেলায় ৯টি দেশের প্রায় ১৩০টি পর্যটন কোম্পানি অংশ নেয়। বাংলাদেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভারত, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক এবং লিথুয়ানিয়ার ৫০টিরও বেশি কোম্পানি দেশ ও বিদেশে আসন্ন পর্যটন মৌসুমে বিশেষ অফারসহ হলিডে প্যাকেজ নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করে।
আয়োজকরা তিন দিনব্যাপী এই মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পর্যটন বিষয়ক সেমিনার, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং ব্যবসায়িক সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেন।