দারিদ্র্য কমলেও আয় বৈষম্য বেড়েছে
বাংলাদেশে গরীবদের আয়বৃদ্ধির হারের তুলনায় ধনীরা অনেক বেশি হারে আরও ধনী হয়েছেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাসিক গড় পারিবারিক আয় ২০২২ সালে বেড়ে ৩২,৪২২ টাকায় পৌঁছায়। ছয় বছর আগে ২০১৬ সালের সর্বশেষ জরিপের তুলনায় এটি প্রায় ১০২ শতাংশ বৃদ্ধি।
২০১৬ সালে মাসিক গড় আয় ছিল ১৫,৯৮৮ টাকা। আর ২০১০ সালে এ আয় ছিল আরও কম — ১১,৪৭৯ টাকা।
তবে আয়ের এ প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হলেও তা হয়তো সবক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য নয়।
আয় বৈষম্য পরিমাপকারী জিনি সহগ ২০২২ সালে বেড়ে ০.৪৯৯ শতাংশ পৌঁছায়। ২০১৬ সালে এটি ছিল ০.৪৮২ এবং ২০১০ সালে ছিল ০.৪৫৮।
অর্থাৎ দেশে আয়ের ক্ষেত্রে বৈষম্য বেড়েছে। যারা আয়ের নিম্নসীমায় আছেন, তাদের সম্পদের পরিমাণ আগের চেয়ে আরও কমে গেছে।
জিনি সহগ শূন্য (০) দ্বারা সম্পূর্ণ সমতা প্রকাশ পায়। আর এ সহগ ১ হলে তা সম্পূর্ণ অসমতাকে নির্দেশ করে।
ভোগ-সম্পর্কিত জিনি সহগ গত বছর ছিল ০.৩৩৪। বিবিএস-এর উপাত্ত অনুযায়ী, এ সহগ ২০১৬ সালে ০.৩২৪ এবং ২০১০ সালে ০.৩২১ ছিল।
অর্থাৎ দেশে আয় বৈষম্য এব ভোগ বৈষম্য দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, মোট আয়ে দারিদ্র্যসীমার সবচেয়ে নিচের দিকে থাকা ৪০ শতাংশ মানুষের অংশ ছিল ২১ শতাংশ আর সবেচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর অংশ ছিল ২৭ শতাংশ।
প্যারিসের ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি ল্যাব-এর ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট ২০২২ অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয়ের ১৬.৩ শতাংশ ছিল কেবল এক শতাংশ জনগণের। আর দারিদ্র্যসীমার নিচের অর্ধেকের এ হিস্যা ছিল ১৭ শতাংশ।
তবে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং করোনাভাইরাস মহামারির বৈরী প্রভাব সত্ত্বেও দেশের দারিদ্র্যের হার গত ছয় বছরে ৫.৬ শতাংশ কমেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ। আর অতি দারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশ।