৬২ বছরের মধ্যে দেশে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদনের রেকর্ড
বিগত ৬২ বছরের মধ্যে এবার দেশে সর্বোচ্চ পরিমাণ লবণ উৎপাদন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত দেশে উৎপাদিত লবণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন। যা দেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিগত বছরে লবণ উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ১৮ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন।
জানা গেছে, দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহ। তীব্র রোদের সুবিধা নিয়েই এখন দৈনিক রেকর্ড লবণ উৎপাদন করছেন চাষিরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় লবণনীতি, ২০২২ অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) লবণ শিল্পের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে। ১৯৬১ সাল থেকে বিসিকের মাধ্যমেই দেশে পরিকল্পিতভাবে লবণ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থিত বিসিকের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচি কার্যালয়ের আওতাধীন ১২টি লবণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার সকল উপজেলায় এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণ চাষের জন্য লবণচাষিদের প্রশিক্ষণ, ঋণ প্রদান এবং প্রযুক্তি সম্প্রসারণসহ সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
গত ২৫ এপ্রিল ১০,৯৩০ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের মাধ্যমে চলতি মৌসুমে মোট লবণ উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন, যা ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিসিকের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে (১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ মে পর্যন্ত) কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, রামু, বাঁশখালী উপজেলাসহ ৬৬ হাজার ৪২৪ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। গত বছর ছিল ৬৩ হাজার ২৯১ একর। গত বছরের তুলনায় এ বছর লবণ চাষের জমি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ হাজার ১৩৩ একর।
এদিকে লবণচাষিদের সংখ্যাও বেড়েছে, চলতি লবণ মৌসুমে লবণ চাষির সংখ্যা ৩৯ হাজার ৪৬৭ জন, যা গত বছর ছিল ৩৭ হাজার ২৩১ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লবণ আমদানি না করে দেশে লবণ উৎপাদনের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে চলতি লবণ মৌসুমে এক মাস আগেই লবণ চাষিদেরকে মাঠে নামানো হয়। চলতি লবণ মৌসুমে লবণ উৎপাদন শুরু হয় গত বছরের ২৪ অক্টোবর।
চলতি লবণ মৌসুমে লবণ উৎপাদন চলমান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ২০ লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে বিসিক।
বিসিক বলছে, লবণ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে স্বল্পমেয়াদী (১ বছর), মধ্যমেয়াদী (১-৫ বছর) এবং দীর্ঘমেয়াদী (৫ বছরের ঊর্ধ্বে) কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ চাষিদেরকে অগ্রিম লবণ চাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রশিক্ষণ, লবণ চাষের নতুন এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং সম্প্রসারণ, সহজ শর্তে লবণ চাষিদের ঋণ প্রদান, একরপ্রতি লবণ উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ, প্রকৃত লবণ চাষিদের নিকট বরাদ্দকরণ, লবণ চাষের জমির লিজ মূল্য নির্ধারণ, লবণ চাষের জমি সংরক্ষণ, আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদনে প্রদর্শনী ও উৎপাদিত লবণের মান নিয়ন্ত্রণে কারিগরি সহায়তা প্রদান, জরিপ পরিচালনা, লবণ চাষ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ এবং লবণ উৎপাদন, মজুদ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।