বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে বি-১ করলো মুডিস, পূর্বাভাস স্থিতিশীল
বাংলাদেশ সরকারের ইস্যুয়ার রেটিং এবং সিনিয়র আনসিকিউরড রেটিং বিএ৩ থেকে বি১-এ নামিয়েছে মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিস। আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য স্বল্পমেয়াদি ইস্যুয়ার রেটিংয়ের ক্ষেত্রে 'নট প্রাইম' মান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর, মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর পর তা পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে পর্যালোচনার ফলাফল জানা গেল তাদের সাম্প্রতিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশের জন্য মুডিস তাদের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রেখেছে।
মুডিসের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি বিদ্যমান। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতারও চলমান সংকটের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। একারণে সার্বভৌম ক্রেডিট প্রোফাইল বি-১ মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সংস্থাটি জানিয়েছে, পরিস্থিতি খানিকটা সহজ হলেও বাংলাদেশে ডলার-সংকট চলমান এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাচ্ছে, যা বৈদেশিক লেনদেনের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। এতে আমদানির ক্ষেত্রে নানান বাধা তৈরি হয়েছে, যার ফলে দেখা দিয়েছে জ্বালানি সংকট।
একইসময়, সরকার আমদানি-নিয়ন্ত্রণের যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল –তা পুরোপুরি প্রত্যাহার করেনি। একাধিক বিনিময় হার চালু এবং সুদের হার ঠিক করে দেওয়ার মতো অপ্রচলিত যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেগুলোও বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি ঘটাচ্ছে।
মুডিস বলেছে, পরিস্থিতি খানিকটা সহজ হলেও বাংলাদেশে ডলার-সংকট চলমান এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাচ্ছে, যা দেশটির বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে আমদানির ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধা তৈরি হয়েছে। যার ফলাফল হিসেবে জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
সর্বোপরি মুডিস মনে করে, অর্থনীতির আকারের তুলনায় কম পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের ফলে সরকারের পছন্দসই নীতি অবলম্বনের বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারকে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে- টাকার অবমূল্যায়ন ও স্বল্প সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ফলে। যা তার ঋণ গ্রহণের সক্ষমতাকে দুর্বল করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মুডিস আশা করছে, বিদেশি অর্থায়ন বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ রাজস্বসংক্রান্ত চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে। তবে মহামারির আগের তুলনায় বৈদেশিক পরিস্থিতি দুর্বল থাকবে। রাজস্ব পরিস্থিতিও দুর্বল হবে উচ্চ মাত্রার ঋণের কারণে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে মুডিস মনে করছে, রাজস্ব সংস্কারের যেসব কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়নে অনেক বছর সময় লাগবে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থায়ন ও সহায়তা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের বাংলাদেশের অর্থনীতির পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখার পক্ষে যুক্তি দেয় মুডিস। ফলে বৈদেশিক ও রাজস্ব খাতে চাপ হালকা হবে বলে তারা মনে করছে।