কাঁচামরিচের দাম এখন পড়তির দিকে
আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ কেজি কাঁচামরিচ আমদানি করা হয়েছে। আমদানি ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সারাদেশে বাজার মনিটরিংয়ের প্রভাবে দ্রুত দাম কমতে শুরু করেছে কাঁচামরিচের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশে কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে ৩৩৯ মে. টন বা ৩ লাখ ৩৯ হাজার কেজি। মরিচের আমদানি শুরু হয়েছিল ২৫ জুন। এখন পর্যন্ত ৪৮৩৮০ মে. টন মরিচ আমদানির অনুমতি নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
একদিকে আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ বৃদ্ধি, অন্যদিকে দু'দিন ধরে সারাদেশে ভোক্তা অধিদপ্তরের বাজার অভিযান। দুয়ে মিলে দু'দিনের ব্যবধানে ৬০০ টাকার মরিচের দাম খুচরায় ২৮০-৩০০ টাকায় নেমে আসে। যদিও ঢাকার কোন কোন বাজারে এখনে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত দামে মরিচ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
জানা যায়, কারওয়ান বাজারে গত সোমবার ভোক্তার অভিযানের কারণে মরিচের পাইকারি মূল্য ১৬০-১৮০ টাকায় নামলেও পরেরদিনই সেটা আবার ২০০-২২০ টাকায় উঠে। তবে ভোক্তা অধিদপ্তর বলছে, সারাদেশে এখন মরিচের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে ভোক্তার বাজার অভিযানে সারাদেশের ৪১টি জেলায় মনিটরিং করে অধিদপ্তর। এর মধ্যে পণ্যের ক্রয়মূল্য দেখাতে না পারা, মূল্যতালিকা না টাঙানো এবং বেশি দামে পণ্য বিক্রি করায় ১১৮টি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগের দিন ১৪৮টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
ঢাকা মহানগরীর কারওয়ান বাজার, গুলশান কাঁচাবাজার, বনানী বাজার, উত্তরা, বাড্ডা ও মহাখালী কাঁচাবাজার, পলাশী, হাতিরপুল কাঁচাবাজার ও নিউমার্কেট এলাকায় মরিচের বিক্রয়মূল্য ও ক্রয়মূল্য যাচাই করা হয়। এসময় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, মরিচের সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে দাম আরও কমে আসবে।
ঢাকার তেজগাঁও, মগবাজার, দিলু রোড, সেগুনবাগিচা সহ কয়েকটি খুচরা বাজারে ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেউ আবার একসঙ্গে এককেজি মরিচ কিনলে দাম আরও খানিকটা কম পাওয়া যাচ্ছে।
জানা যায়, ঈদের আগে হঠাৎ করেই সারাদেশে কাঁচামরিচের দাম বাড়তে শুরু করে। ১৪০-১৫০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে কাঁচামরিচ ঢাকায় প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায় উঠে, যা ঢাকার বাইরে ১০০০ টাকায়ও পৌঁছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহে মরিচের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর সঙ্গে ঈদের আগে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে ক্ষেত নষ্ট হয় এবং মরিচ তুলতে না পারায় সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হয়। এই ঘাটতি সামাল দিতে ঈদের আগেই ২৫ জুন মরিচ আমদানির অনুমতি দিলেও এর পরপরই ৫ দিনের ছুটির মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা আতংক তৈরি করে মরিচের দাম বাড়িয়ে দেয়।
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান টিবিএসকে বলেন, 'আমদানি ও মনিটরিংয়ের কারণে দ্রুত স্বাভাবিক হচ্ছে মরিচের বাজার। এটা আরও কমে আসবে।'